ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট অরুনাংশু দত্ত টিটো বলেছেন, দেশে এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় আছে।
ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাই আওয়ামী লীগের বড় অর্জন। আমরা চাই অসাম্প্রদায়িক চেতনায়
দেশ এগিয়ে যাক, শান্তি ফিরে আসুক। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে উঠবে আমাদের
বাংলাদেশ ।
আজ বুধবার বিকালে শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শহরের গোবিন্দ জিউ মন্দির
প্রাঙ্গণে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ এর আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতি’র বক্তব্যে
তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধু’র যে আজন্ম লালিত স্বপ্ন বাংলাদেশে শান্তি বজায় থাকবে, সকল
ধর্মের ও বর্ণের মানুষ সম মর্যাদার সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধের ও অসাম্প্রদায়িক চেয়তা নিয়ে
এগিয়ে যাবে। এদেশ ও জাতির দ্রæত তম সময়ে সমৃদ্ধি ও উন্নতি হবে এবং দেশের অগ্রগতি
অব্যাহত থাকবে। সে জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
এডভোকেট অরুনাংশু দত্ত টিটো আরো বলেন, সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায়
রেখেই আরও এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই দেশে আমরা ধর্ম, বর্ণ,
নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে পথ চলি। আমরা সব সময় বলি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমাদের
উৎসবগুলোতে সবাই আমরা এক হয়ে উদযাপন করি। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটা
অর্জন। আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে চলতে শিখেছি।
আওয়ামীলীগের এ নেতা আরো বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে হিন্দু,
মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মাবলম্বীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বুকের রক্ত বিলিয়ে
এ দেশ স্বাধীন করেছে। কাজেই সেই স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা সব সময় চেয়েছি প্রতিটি
ধর্মের মানুষ তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে, সম্মানের সঙ্গে পালন করবে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগের আমনে সব ধর্মের মানুষ ভালো থাকে। সেই পরিবেশটা
সৃষ্টি করা এবং আমরা তা করতে পেরেছি। অন্তত এটুকু বলতে পারি, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়
আসে তখন সেই সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, মানুষের আর্থিক সচ্ছলতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের মনে আনন্দ উৎসব আছে বলেই আজ পূজার সংখ্যা বেড়েছে। আমরা সব ধর্মের
মানুষ উৎসব পালন করি।
প্রধান অতিথি হিসেবে রমেশ চন্দ্র সেন এমপি বলেন, যখন আমাদের ঈদের জামাত হয় তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের যুব সমাজ
কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। আবার যখন পূজা-পার্বণ হয় তখন আমাদের মুসলমান যুবকরা
সেখানে উপস্থিত থাকে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। এই সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশ আমরা সৃষ্টি
করতে পারি। সব ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে- শান্তি, মানবতা।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা, কীর্তন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা
চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখা’র সভাপতি এ্যাড. অরুনাংশু
দত্ত টিটো’র সভাপতিত্বে গেষ্ট অব অনার ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো: মাহবুবুর
রহমান ও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক।
বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পূজা উদযাপন পরিষদের
সহ-সভাপতি দীপক কুমার রায় ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম
সরকার। অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন শ্রী শ্রী রাম কৃষ্ণ সেবা সংঘের সহ-সভাপতি
বাসুদেব ব্যানার্জি। এতে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলা
শাখা’র সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ
সম্পাদক প্রবীর গুপ্ত বুয়া ও জেলা পরিষদ সদস্য ও শ্রী শ্রী গোবিন্দ জিউ মন্দির কমিটি’র
সাধারণ সম্পাদক এবং জন্মাষ্টমী উদয়াপন কমিটির আহবায়ক সমীর দত্ত।
অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন, সদর উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখা’র সহ-
সভাপতি অশোক দাস ও সম্প্রীতি বাংলাদেশ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক
আসাদুজ্জামান আসাদসহ পূজা উদযাপন কমিটি আওয়ামী লীগ ও সনাতন ধর্মাবম্বলীর নেতারা
উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে ধর্মীয় কীর্তন ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা
হয়।
এর আগে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখা’র নেতৃবৃন্দ অতিথিদের ফুল
দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এর আগে রাম মন্দির থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান
প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গোবিন্দ জিউ মন্দির প্রাঙ্গণে এসে মিলিত হয়।