মনসুর আহাম্মেদ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:সোনার হরিণ এমনি এমনি আসে না মানুষের হাতের মুঠোয় । জীবন সংগ্রামে নিরন্তর ছুটে চলেছেন দেশের পথপ্রান্তরে । সঞ্চয় করেছেন অভিজ্ঞতার ঝুলি , ভারমুক্ত হয়েছে ব্যর্থতার পাল্লা অত:পর অর্জিত হয়েছে সফলতার চাবি। রোগী কিংবা মরদেহ নিয়ে ছুটে চলা অজানা গন্তব্যে, ক্লান্তি কিংবা ঘুমহীন রজনী কোনটাই দাবিয়ে রাখতে পারেনি হুমায়ুনকে। তাই তো সুযোগ পেলেই প্রকৃতিকে উপলব্ধি করেছেন খুব কাছ থেকে। স্বপ্ন বুনেছেন একজন উদ্যোগতা হতে। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা আর ব্যর্থতার বিনিময়ে সাফল্যের গল্পটা বুনন করেছেন । তেমনি এক বীরত্বগাঁথা গল্প জানবো ঠাকুরগাঁও সদরের আখানগর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের মাল্টা চাষী হুমায়ুনের জীবন থেকে। শুরুটা ছিল ভীষণ অনিশ্চিত এবং দৈন্যদশায়। উদ্ধুদ্ধ হয়েছিলেন শাইখ সিরাজের "কৃষি দিবানিশি " অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে।
ঠাকুরগাঁওয়ের ভূ-প্রকৃতি মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী। সব ধরণের মাটিতে মাল্টা জন্মালেও সুনিষ্কাশিত, উর্বর, মধ্যম থেকে হালকা দো'আঁশ মাটি মাল্টা চাষের জন্য উত্তম। মধ্যম অম্ল থেকে সামান্য ক্ষারীয় মাটিতে মাল্টা জন্মে। তবে ৫.৫ থেকে ৬.৫ (ph) অম্লতায় ভালো জন্মে।
ঠাকুরগাঁওয়ের অজঁপাড়ায়ে জন্ম হুমায়ুন কবিরের। জীবিকার তাগিদে ঢাকা শহরে বসবাস করেন দীর্ঘদিন , বেসরকারি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স চালান দীর্ঘ ২০ বছরের অধিক সময় ধরে, বর্তমানে দিনাজপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত। এর সুবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটে চলা মুমূর্ষু রোগি কিংবা শবদেহ নিয়ে। এমনি একদিন বরিশালের পিরোজপুরে মাল্টা বাগান চোখে পড়ে সেই থেকে মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি।
হুমায়ুন কবির বলেন, আমি বর্তমানে ১১ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করেছি। গতবারের তুলনায় এ বছর বেশি ফলন হয়েছে। আশা করছি ৩/৪ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে বাগান করতে গিয়ে আমাকে ইউনিয়ন কৃষি সুপারভাইজার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ কেহ আমাকে শলাপরামর্শ দেননি, সে জন্য প্রথমের দিকে চারা নির্বাচন করতে আমাকে অসুবিধায় পড়তে হয়। তিনি আরও বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা কিংবা স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ পেলে আগামীতে ৩০ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষের পরিকল্পনা আছে।
বারি-১, ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানি ও ভিয়েতনামের ইয়ালো জাতের মাল্টা এ বাগানে আছে।
বাগানের ম্যানেজার দবিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাগানে গড়ে ৬/৭ জন শ্রমিক কাজ করে। আমরা অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে ফল হারভেস্টিং শুরু করবো।
বাগানের শ্রমিক ইন্তাজ আলী বলেন, আমরা ৪/৫ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করি, এর উপার্জনে আমাদের সংসার চলে।
এদিকে বাগান দর্শনার্থী খালেদ আল মাসুদ বলেন, আমি হুমায়ুন ভাইয়ের মাল্টার বাগানটা দেখতে এসেছি। দেখে ভালো লাগলো, ভবিষ্যতে আমিও মাল্টার বাগান করবো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ছোট-বড় মোট আট'শর অধিক লেবু জাতীয় বাগান রয়েছে, যা মাল্টা এবং কমলা লেবু। ১০০ হেক্টরের অধিক জমিতে মাল্টা বা লেবু জাতীয় বাগানের চাষ হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি লেচু জাতীয় অর্থাৎ মাল্টা চাষের জন্য ভীষণ উপযোগী। এ স্কীমের আওতায় সদর উপজেলা বাদে বাকি চারটি উপজেলায় লেবু জাতীয় প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি সহায়তা , প্রশিক্ষণ ও চারা বিতরণ প্রকল্প বিদ্যমান। জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সকলেই নিরলস ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন এ ধরনের বাগান সম্প্রসারণের জন্য।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কৃষি ক্ষেত্রের পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হিসেবে স্বল্প জনবলে দ্বারে দ্বারে সেবা দেওয়া সম্ভব নয়, তবে মোবাইলের মাধ্যমে যে কোন কৃষি বিষয়ক সমস্যা সমাধানে আমরা সবাই সচেষ্ট। এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিকেল তিনটার পর প্রান্তিক কৃষকদের সেবা দেওয়ার জন্য অফিসে অবস্থান করেন। তাই কোন শলাপরামর্শ থাকলে যে কেউ সহজেই যোগাযোগ করতে পারবেন।
প্রকাশক/সম্পাদক :- শাওন আমিন।। ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক :- মোঃ গিয়াস উদ্দিন।। নির্বাহী সম্পাদক :- ঝড় আমীন।। প্রধান কার্যালয় :- হালিশহর, চট্রগ্রাম। মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২০৬১১৬৩ ঢাকা কার্যালয়:-বাসা নং ৫১/৩,ধানমন্ডি ৩/এ, ঢাকা।-১২০৯ মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২৪১৫৮৫৩,+৮৮০১৫৮০৮২০৬৬৩,+৮৮০১৭১২০৬১১৬৩
E-mail :- newszhor@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত. বাংলাদেশ হোস্টিং