1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
আটোয়ারী উপজেলা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি জাহেদ, সম্পাদক দুলাল জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত অপারেশন ডেবিট হান্ট নলছিটিতে গ্রেফতার -২ নলছিটি সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গ্রেফতার বাগমারায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত  রায়পুরা মরজালে মাদক ব্যবসায়ী বাধা দেওয়ায় উপজেলা তাতীদলের সদস্য সচিব সহ আহত ২ চাটমোহর থানায় বিএনপি অফিসে ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় আটক ৪জনকে জেল হাজতে প্রেরণ প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকদের নিয়ে বায়োলিডের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত মাটি কাটার গর্তে গোসল করতে নেমে প্রাণ হারাল শাওন নামের এক কিশোর

সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধার ঘরে তালা দিল কারবারিরা

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।তাঁত ব্যবসায় সুদে কারবারিদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা সুদে ধার নেন ইদ্রিস মল্লিক (৫৫)। সুদের  টাকা দিতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। আর সেই টাকা আদায়ে ইদ্রিসের ঘরে থাকা তার বৃদ্ধা মা রমেছা বেগমকে (৯০) জোর করে বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় সুদে কারবারিরা।

এমনই এক অমানবিক ঘটনা ঘটেছে পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া কারিগরপাড়া গ্রামে। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তালা ভেঙে ওই বৃদ্ধাকে তার ঘরে তুলে দেন।
মঙ্গলবার বিকেলে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের বাসিন্দা মৃত রায়হান মল্লিকের স্ত্রী বৃদ্ধা রমেছা বেগম তার ছেলে ইদ্রিসের ঘরের দরজার সামনে বসে আছেন। টিনের ঘরটিতে তিনটি কক্ষ। দুটি কক্ষ তার ছেলের। আর একটি কক্ষে থাকেন বৃদ্ধা রমেছা। তিনটি কক্ষে তালা ঝোলানো। ছেলে ইদ্রিস বা তার স্ত্রী-সন্তান কেউ বাড়িতে নেই।
জানতে চাইলে বৃদ্ধা রমেছা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘তার ছেলে ইদ্রিস তিনজনের কাছ থেকে সুদে টেকা নিছিলো। সেই টেকা দেয় না। ছাওয়াল কোনে পলাইছে জানি না। খলিল, রইচ আর দুলাল গত সোমবার সকালে বাড়ির পর আইসে টেকা চায়। আমি কইছি ছাওয়ালেক টেকা দিছেও তার কাছে যাও। টেকা যহন দিছেও তহন তো আমার কাছে শোনো নাই। এহন আমার কাছে টেকা চাইচ্ছেও ক্যা। পরে ওরা কয় ঘরের থেনে বাড়াও, ঘরে তালা দেবো। এই কয়া আমাক জোর করে ঘরের থেনে বাইর কইরে দিয়ে তালা দেয়। পরে আমি চিয়েরমেনেক কইছি।’
এদিকে, বিকেল ৪টার দিকে চরতারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান তার পরিষদের অন্য দুই ইউপি সদস্যসহ বৃদ্ধার বাড়িতে যান। এ সময় স্বজন প্রতিবেশীসহ অন্যান্য মানুষের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে বৃদ্ধা রমেছা বেগমকে ঘরে তুলে দেন। তাকে বাড়িতে বসবাসে আশ্বস্ত করেন। এ সময় বৃদ্ধাকে কিছু নগদ আর্থিক সহায়তাও দেন চেয়ারম্যান।
সেখানে উপস্থিত রমেছা খাতুনের ছোট ছেলে গোলাম মোস্তফা জানান, ‘তারা চার ভাই, দুই বোন। ইদ্রিস আলী মেজো ভাই। তাঁত ব্যবসার করেন। চারটি তাঁতের কারখানা আছে তার। বছর খানেক আগে ব্যবসার কারণে একই গ্রামের মাদ্রাসাপাড়ার বাসিন্দা খলিল হোসেন, রইচ উদ্দিন ও দুলাল হোসেনের কাছ থেকে টাকা সুদে ধার নেন। এখন সুদের টাকা দিতে পারেন না। সুদে কারবারিরা তাদের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন। সেই ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোথায় গেছে জানি না। সোমবার সকালে ওই তিনজন এসে ঘরে তালা মেরে দিয়ে গেছে। আমরা বাধা দেই নাই যদি মারধর করে।’
স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম বলেন, সুদের টাকার জন্য ছেলেকে না পেয়ে তার বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে তালা দেওয়ার ঘটনাটি একটি জঘন্যতম অমানবিক ঘটনা। সুদের কারবারিদের কারণে অনেক সংসারে অশান্তি বিরাজ করছে। তাদের আমরা বিভিন্ন সময়ে সুদের ব্যবসা করতে নিষেধ করি। কিন্তু তারা গোপনে এ কাজগুলো করে। যারা সুদে টাকা নেয় তাদের সচেতন হওয়া দরকার।
চরতারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, আজ বিকেলে পরিষদ থেকে বাড়ি যাবার সময় ওই বৃদ্ধা আমাকে ঘটনাটি জানায়। তখনই আমি ওই বাড়িতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই। সুদের টাকার জন্য এমন কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি দ্রুত তালা ভেঙে ঘরে তুলে দিয়েছি। কোনো সমস্যা হলে জানাতে বলেছি। সুদের ব্যবসা গ্রামগঞ্জে এমনভাবে ঢুকেছে তাদের প্রতিহত করা এখন সময়ের দাবি। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের সহযোগিতা চাই, যাতে সুদের ব্যবসা বন্ধ করতে পারি।
এ বিষয়ে কথা হয় সুদে কারবারি তিনজন তারাবাড়িয়া মাদ্রাসাপাড়ার বাসিন্দা খলিল হোসেন, রইচ উদ্দিন ও দুলাল হোসেনের সঙ্গে। তারা সুদে টাকা ধার দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তাদের তিনজনের কাছ থেকে জমি বন্ধক রাখা বাবদ মোট ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন ইদ্রিস মল্লিক। তিনি টাকাও ফেরত দেন না, জমিও দেন না। এখন আমাদের তো টাকা লাগবে। কে দিবে টাকা। তিনি তো বাড়ি থেকে পলাতক। তাই বাধ্য হয়ে ইদ্রিসের বাড়িতে গিয়ে তার ঘরে তালা দিয়েছি।
তাই বলে বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে তার কক্ষে তালা দেওয়া কি ঠিক কাজ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, কাজটা ঠিক হয় নাই। আমরা জানি ঘরটা ইদ্রিসের। যাহোক চেয়ারম্যান তালা ভেঙে দিয়েছেন, ভাল করেছেন।
এ বিষয়ে তাঁত ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং