মোঃ জাহিদ হোসেন দিনাজপুর প্রতিনিধি :দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বৈগ্রাম ও কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার ঘরবাড়িতে ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় মানববন্ধনে বিক্ষোভ করেছে এলাকা বাসি। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা উত্তোলনের কারণে কয়লা খনি ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার সকাল ১১টায় পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসালম এর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধনে বৈগ্রাম ও কাশিয়াডাঙ্গার প্রায় দেড় হাজার পরিবার অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভ শেষে দুপুর ১২ টায় বৈগ্রাম মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে কয়লা খনি ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, ভূগর্ভ থেকে কয়লা খনির কয়লা উত্তোলনের কারণে আমাদের বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এলাকার মানুষ ভেবেছিল এই কয়লা খনি আমাদের জীবন পরিবর্তন করে দিবে, কিন্তু এখন এই খনি আমাদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, আমাদেরকে সব সময় আতংকে থাকতে হচ্ছে।
শত শত বসতবাড়ী কম্পনের কারণে ফেটে যাচ্ছে।
বাড়ীর টিউবয়েলগুলিতে কোন পানি উঠছে না, বৈগ্রাম কাশিয়া ডাঙ্গা গ্রাম থেকে ফুলবাড়ী পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল অবস্থা, কৃত্রিম ভূমিকম্পনের কারণে ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকা দায় হয়েছে।
ক্ষনি কর্তৃপক্ষকে বার বার এই এলাকার সমস্যা নিয়ে কথা বললেও তারা আমাদের কোন কথা কর্ণপাত করেন না। তিনি মানববন্ধনে আরও বলেন, আমাদের ৬ দফা দাবি মধ্যে রয়েছে। ক্ষতি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার হতে চাকুরি দেওয়ার থাকলেও গত ০৫ বছরেও তা দেওয়া হয়নি। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থদের স্থায়ী চাকুরি দিতে হবে, বৈগ্রাম ও কাশিয়া ডাঙ্গা দুটি গ্রামের পরিবারদেরকে দ্রুত পুণঃ বাসন করতে হবে, মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দিতে হবে, অবশিষ্ট ক্ষতি পূরনের টাকা দিতে হবে, প্রতিটি গ্রামে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে, মসজিদ, মন্দির, স্কুল কলেজ এবং এই এলাকায় উন্নত মানের একটি হাসপাতাল নির্মান করতে হবে, ক্ষনির উত্তোলনকৃত কয়লার ৫% বোনাস দিতে হবে।আমাদের দাবি বাস্তবায়নে খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংসদ সদস্যকে অবগত করলেও আজ পর্যন্ত কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছেনা। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে আর কতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই গ্রামগুলিতে বসবাস করব? এই এলাকার ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা তোলার কারণে প্রতিনিয়ত দেবে যাচ্ছে। আমরা এখান থেকে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে যাব, রাস্তার বেহাল অবস্থা থাকায় অ্যাম্বুলেন্স্ও এই গ্রামগুলিতে আসতে চায় না। তাহলে আপনারা বোঝেন আমরা কিভাবে জীবনযাপন করছি?
সংগঠনের সহ-সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানে কেউ এগিয়ে আসছে না। এই এলাকার নির্বাচীত সংসদ সদস্য কে মানুষের সুখ দুঃখের দিনেও পাশে পাওয়া যায় না। তিনি এলাকার উন্নয়ন তো দুরের কথা দেখতেও আসেন না।এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বৈগ্রাম কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোঃ আবেদ আলী, আব্দুর রহমান বাচ্চু, শফিকুল ইসলাম, মিনহাজুল, মহিলা মেম্বর মোছাঃ পুতু মনি, তৃপ্তি বেগম সহ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।এই বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।পরিশেষে সভাপতি বলেন, আমাদের আজকের এই সমাবেশে দাবী মেনে না নিলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত থাকবে।