স্টাফ রিপোর্টার।। বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, চা আইন একটি যুযোপযোগী আইন। এই আইন মেন চললে সকলেরই কল্যাণ হবে।
বুধবার সকালে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চা শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় ও চা আইন-২০১৬ অবহিতকরণ বিষয়ক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, চা চাষীদের কল্যাণে চা আইন, চা চাষীদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার ও বাংলাদেশ চা বোর্ড।
তিনি বলেন, চা চায়ের গুনগত মান উন্নয়ন ও সঠিক কাঁচা চা পাতা তোলার জন্য চাষীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে চা বোর্ড। আমরা প্রণোদনার আওতায় চাষীদের প্রুনিং, প্লাকিং মেশিন বিনামূল্যে বিতরণ করছি। চায়ের দাম নিয়ে আমরা কাজ করছি। উত্তরের চায়ের দাম বৃদ্ধিতে বা চাষীরা চায়ের নায্য দাম যেন পান সে লক্ষ্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পঞ্চগড়ে নিলাম কেন্দ্র চালু হয়েছে। এখন চাইলেই আপনারা চায়ের দাম দেখতে পাচ্ছেন। চাষী ও কারখানা মালিকদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছি আমরা।
তিনি আরো বলেন, কাচা চা পাতার মূল্য পেতে হলে ভালো মানের পাতা উৎপাদন করতে হবে। চা চাষীদের বিরাজমান সমস্যাগুলো দুর করতে চা বোর্ড কাজ করছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের শ্রীমঙ্গলের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট আয়োজিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রিয়াজউদ্দিন । কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে পঞ্চগড় চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চট্টগ্রাম অফিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (পরিকল্পনা) সুমন শিকদার, পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন, স্মল টি ওনার্স এন্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল ইসলাম খোকন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বক্তব্য দেন। সভায় চা কারখানা মালিক, চা বাগান মালিক, চা চাষী, চা সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি টেকসই ও গুনগত মান সম্পন্ন চা উৎপাদনের লক্ষ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উপযুক্ত অভিযোজন কৌশল শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল ডিগ্রী কলেজ মাঠে ক্ষুদ্র চা চাষী সমবায় সমিতির মাঝে বিনামূল্যে প্লাকিং মেশিন বিতরণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, দেশের চা নিলাম ও চায়ের বিপণন কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে পঞ্চগড়ে পূর্ণাঙ্গ অনলাইন চা নিলাম পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে চা বোর্ড নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের চা উৎপাদনের ৬৫ শতাংশ চা সিলেট অঞ্চলে উৎপাদিত হয়। সেই সিলেট অঞ্চলে চায়ের নিলাম কেন্দ্র করতে সময় লেগেছে ১০০ বছর। কিন্তু উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদনের মাত্র ২০ বছরের মাথায় সরকার একটা নিলাম কেন্দ্র চালু করেছে। চা বোর্ডে ক্ষুদ্র চা চাষীদের কাচা চা পাতার মূল্য নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ফ্যাক্টরিগুলোতে জরিমানা করেছে।
কর্মশালায় বাংলাদেশ চা বোর্ডের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চট্টগ্রাম অফিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (পরিকল্পনা) সুমন শিকদার, পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন, স্মল টি ওনার্স এন্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হক খোকন, একতা ক্ষুদ্র চা চাষী সমিতির সদস্য রফিকুল ইসলাম, মাঝিপাড়া ক্ষুদ্র চা চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরানুল ইসলাম চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে একই স্থানে সদর উপজেলার চা চাষীদের জন্য চা আবাদির প্রুনিং ও পরবর্তী পরিচর্যা বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ চা বোর্ডের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের আয়োজনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা মোহাম্মদ ছায়েদুল ইসলাম ক্ষুদ্র চা চাষীদের চা আবাদির প্রুনিং ও পরবর্তী পরিচর্যা বিষয়ক ধারণা দেন। প্রশিক্ষণে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৫০ জন ক্ষুদ্র চা চাষী অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে পরে টেকসই ও গুনগত মান সম্পন্ন চা উৎপাদনের লক্ষ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উপযুক্ত অভিযোজন কৌশল শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৪ টি ও ঠাকরগাঁও জেলার ১টি ক্ষুদ্র চা চাষী সমবায় সমিতির মাঝে বিনামূল্যে প্লাকিং মেশিন বিতরণ করা হয়।
মঙ্গলবার রাতে তিনি পঞ্চগড় সার্কিট হাউজে স্মল টি গার্ডেন ওনার্স এন্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত পঞ্চগড় অনলাইন চা নিলাম কেন্দ্রের অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় করেন। স্মল টি গার্ডেন ওনার্স এন্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সভাপতি আমিরুল হক খোকন সভাপতিত্ব করেন। #