এম,সফিউল আজম চৌধুরী (চট্টগ্রাম):-আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনের মাঠে জমজমাট প্রচারে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।জেলার অন্যান্য আসনের চাইতে নির্বাচনী এলাকা-২৯০ চট্টগ্রাম -১৩(আনোয়ারা কর্ণফুলী) আসনটিতে ভিন্নতার আমেজ দেখা যাচ্ছে। এক সময় বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম-১৩ আসনে (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) প্রার্থী হয়েছেন সাতজন।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা
প্রতীক পেয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। জাতীয় পার্টির আবদুর রব চৌধুরী পেয়েছেন লাঙ্গল, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোছাইন পেয়েছেন চেয়ার, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবুল হোসেন পেয়েছেন মোমবাতি, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মো. আরিফ মঈন উদ্দিন পেয়েছেন একতারা, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক পেয়েছেন বটগাছ ও তৃণমূল বিএনপির মকবুল আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন সোনালী আঁশ।চট্টগ্রাম–১৩ (আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা ) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭২ হাজার ৫২১ জন।তবে নির্বাচনী প্রচারনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ছাড়া অন্যদের দৃশ্যমান প্রচার নেই।এই আসনের ১৫ টি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ লোকালয়ে কিছু ব্যানার, পেষ্টুন ছাড়া আর কোন প্রচারনা দেখা যাচ্ছে না অন্য প্রার্থীদের। ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী খালীপোষ্টে গোল করতে পারবে বলে অনেকে মতামত ব্যাক্ত করেছেন।কিন্তু নিরপেক্ষ সরকারে দাবি মেনে না নেওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। ফলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখানোটাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।তবে এই চ্যালেন্জ মোকাবিলা করার লক্ষ্যে নির্বাচনের কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে আওয়ামী লীগ। কৌশলেও এসেছে নতুনত্ব। বিএনপির ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত কর্ণফুলী উপজেলা সর্বোচ্ছ ভোটার উপস্থিতি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করার লক্ষ্যে রাত দিন পুরো এলাকায় দলীয় কর্মী বাহিনী নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন কর্ণফুলী উপজেলার চেয়ারম্যান, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক চৌধুরী।ফোনে কথা হয় তাঁর সাথে,আলাপ কালে তিনি জানান,বিএনপি ও তাদের সমমনা দল নির্বাচনে অংশ না নিলে ও নির্বাচনে সর্বোচ্ছ ভোটার উপস্থিতি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করার লক্ষ্যে যা করনীয় আমার তার কর্মকান্ড ইতিমধ্যে শেষ করেছি, আমি কর্ণফুলী উপজেলার সম্মানিত জনগনকে আহবান করতেছি আগামী ৭জানুয়ারি নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটের অধিকার প্রয়োগ করে কর্ণফুলী উপজেলার অসমাপ্ত কাজগুলো করার জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবারো জাবেদ ভাইকে নির্বাচিত করি।আসন্ন নির্বাচন প্রংগে বি এন পির কয়েক জন সিনিয়র নেতার সাথে আলাপ করলে তারা জানাই,যেহেতু দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপি সহ সমমনা দল এ সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি তাই এই নির্বাচন কতটা গ্রহনযোগ্য হবে তা সবাই জানে,এ প্রসংগে মন্তব্য করতেও ঘৃনা লাগে।দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে কথা হয় ৪৫বছর বয়সী ভ্যান চালক হোসেনের সাথে।নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, বিষয়টি নিয়ে তার তেমন একটা আগ্রহ নেই।,,,,,,,,, কারন এই নির্বাচনকে তিনি ‘একতরফা নির্বাচন’ হিসেবে দেখছেন। তার মতে ‘ভোট দেয়া এবং না দেয়া সমান কথা’।“বাংলাদেশে মূল দল দুইটা। আওয়ামী লীগ আর বিএনপি। বিএনপি তো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেনা। একতরফা নির্বাচনের তো সুষ্ঠু আর অ-সুষ্ঠু নাই। সেখানে সেন্টারে গেলেও সমস্যা নাই না গেলও সমস্যা নাই,” ভোট তো যথা নিয়মে সমাপ্তি হবে।গ্রামের চায়ের দোকান কিংবা বাজারে নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে কোন আলোচনা দেখা গেলনা। বেশিরভাগ মানুষ তাদের নৈন্দন্দিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত।এছাড়া অনেকে মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করলে তিনি হয়তো ‘বিপদে পড়বেন’।এখানকার নারীরাও নানা ধরণের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।বিভিন্ন গ্রামে বেশ কয়েকজন নারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচন বিষয় নিয়ে বেশিরভাগ নারীর কোন ধারণা নেই। তারা দৈনন্দিন জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত।তারা ভোট দিতে যাবেন কি না সেটি নির্ভর করছে স্বামী কিংবা পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপর।