মোঃ জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
দামে কম ও সহজলভ্য হওয়ায় হেরোইন ও ইয়াবার বিকল্প ব্যাথানাশক ট্যাবলেট মাদকসেবিদের কাছে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে ঔষধের দোকানগুলো ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অবাধে বিক্রি করছে ব্যাথানাশক ট্যাবলেট টাফেনটা
দিনাজপুরের জেলা সহ ১৩ উপজেলায় চলছে ঘোড়াঘাট উপজেলার পৌরশহর ও ইউনিয়নের বেশ কিছু ঔষধের দোকানসহ ভ্রাম্যমান মাদক বিক্রেতারা এই ট্যাবলেট বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্য মাদকের চেয়ে সহজলভ্য এবং দামে কম হওয়ায় মাদকসেবীদের কাছে এই মাদকের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগে বেশি লাভের আশায় কয়েকগুন বেশি দামে এ সব ঔষধ বিক্রি করছে মাদক সেবিদের কাছে। আর মাদকসেবিরা মাদকের টাকা জোগান দিতে জড়িয়ে পড়ছে নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট মাদকসেবীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। এই ট্যাবলেটের খুচরা মূল্য ১০-১২ টাকার মধ্যে হলেও এখন প্রতিটি ট্যাবলেট ৭০-৮০ টাকা। এমনকি ১০০ থেকে দেড়শ’ টাকা দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি হেরোইন ও ইয়াবার দাম অনেক গুন বেশী হওয়ায় এ জাতীয় ট্যাবলেট ব্যবহার করে বলে মাদকসেবীরা জানায়।
এদিকে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনেও তেমনভাবে এই জাতীয় ট্যাবলেটের নাম লেখা হয় না। প্রেসক্রিপশন ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি হচ্ছে এই ট্যাবলেট । এ কারণে বাংলাদেশ সরকার এই ট্যাবলেট নিষিদ্ধ করেছে।বাংলাদেশ সরকার এই ট্যাবলেট নিষিদ্ধ করার কারনে ভারত থেকে চোরাইপথে দেদারছে পাচার করে আনা হচ্ছে এই ট্যাবলেট।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাদকসেবী জানায়, ইয়াবা/হেরোইনের বিকল্প হিসেবে তারা টাপেন্টাডল,লোপেন্টাডল জাতীয় ঔষধ গুড়ো করে ইয়াবা/হেরোইনের মতো পুড়িয়ে সেবন করে। দামে কম, সহজলভ্য ও একই রকমের নেশা হয় বলে তারা এ সব ব্যবহার করে। ওই মাদকসেবী আরও জানায়, এ্যান্টি হিস্টামিনিক সিরাপ ও ফেনারগ্যান জাতীয় সিরাপ এবং ভিটামিন এর সাথে এ সব ট্যাবলেট গুড়ো করে মিশিয়ে তারা ফেন্সিডিল এর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ তৌহিদুল আনোয়ার জানান, টাপেন্টাডল হাইড্রোক্লোরাইড মূলত ব্যাথার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। বেশি দিন ব্যবহার করলে এটির প্রতি হেরোইন এর মতো আসক্তি তৈরী হয়। এটি নেশা হিসেবে ব্যবহার করলে কিডনি ড্যামেজ, লিভার ড্যামেজ, ব্রেন স্ট্রোক এমনকি হার্ট এটাকে মৃত্যু হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এলাকার বেশ কিছু ঔষধের দোকানের উপর নজরদারি করা হচ্ছে। এর আগেও ঔষধের দোকানে নিষিদ্ধ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট বিক্রির অপরাধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ প্রায়ই ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারিদের গ্রেফতার করছে। পুলিশের এই অভিযান চলমান রয়েছে।