স্টাফ রিপোর্টার।। পৌষের বিদায় ঘন্টা বাজলেও দাপট ছড়াচ্ছে শীত। এ শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। গত পাঁচদিনে মেঘের আড়ালে সূর্য। রোদহীন দিনভর শীত দূর্ভোগে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে।
আজ (শুক্রবার ১২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে তাপমাত্রার রেকর্ডের তথ্যটি জানিয়ে জেলার প্রথম শ্রেনির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, গত পাঁচদিন ধরে মেঘ-কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে সূর্য। কুয়াশার কারণে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। দিনের তাপমাত্রাও নিম্নমুখী। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সে অনুপাতে এ অঞ্চলে এখন শীতের তীব্রতা বেশি হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উত্তর-পশ্চিমের হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে এ সীমান্ত জনপদের মানুষ। গত পাঁচদিন ধরেই কুয়াশার আড়ালে সূর্য ঢাকা পড়ে বিরাজ করছে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন পাথর-চা শ্রমিক, দিনমজুর, থেকে নানান শ্রমজীবীরা। দৈনন্দিন রোজগার কমে যাওয়ায় কষ্টে দিন যাপন করছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই শীত উপেক্ষা করেই কাজে বের হতে দেখা গেছে তাদের। বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। তারাও ঠান্ডার প্রকোপের কারণে খেতখামারে কাজ করতে পারছেন না। প্রয়োজনীয় গরম মিলছে না শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের।
এদিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিনের তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ ডিগ্রির মধ্যে। সন্ধ্যার পর আবার ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কোলাহলহীন হয়ে পড়ে শহর ও গ্রামেরও হাটবাজারগুলো। বাজারগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় কাগজের কাটন, টায়ার ও কাগজে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারন করতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, আজকে নিয়ে গত চারদিন ধরে সকাল থেকে দেখা মিলছে না সূর্যের। এতে করে পরিবারসহ বিপাকে পড়েছে গৃহপালিত প্রাণিরাও। ভোর-সকালে কাজ করা যাচ্ছে না। কাজ করতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। ছেলে-মেয়েরাও ঠিকমত পড়ালেখা করতে পারছে না। সন্ধ্যার পর থেকে পুরো রাত বরফ হয়ে উঠে। ঘরের আসবাবপত্র, বিছানাপত্র, ঘরের মেঝে পর্যন্ত স্পর্শ করলে বরফের মতো ঠান্ডা মনে হয়। ঘরের গৃহিনীদের কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। আয় রোজগার কমে যাওয়ায় অনেকে পরিবারের কথা চিন্তা করেই এই হাড়কাঁপা শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেড়িয়েছেন।
এদিকে শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে, জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, ÔÔপঞ্চগড় শীবপ্রবণ জেলা। এখানে প্রায়দিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে। শীত মোকাবেলায় জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণায়ল থেকে প্রায় ২৬ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব কম্বল প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র উপহার হিসেবে বিতরণ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আরো শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই আরো শীতবস্ত্র পাওয়া যাবে। এছাড়া প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগেও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।ÕÕ #