বসন্ত তুমি নিজগুণে বছরের সময় অনন্য,
নাতিশীতোষ্ণ তুমি সবার প্রাণে প্রাণে প্রাধান্য।
প্রকৃতি সযতনে আসে ভিন্ন ভিন্ন আমেজে,
চক্রাকারে ঘুরে পুনরায় বসন্ত এলো যে।
শৈতবৈরাগ্যের কঠোরতর সাধনা শেষে,
প্রকৃতি আবার ভরে উঠে রুপ রঙ রসে।
নবসাজে সজ্জিত প্রকৃতির কি এক মোহিত সাজ,
রুপমাধুরিতে বৈচিত্র এনেছ হে মহা ঋতুরাজ।
শীতের হাওয়ায় শুষে নেয়া আদ্রতায় রুক্ষতা,
তুমি দুয়ার খোল দক্ষিনা হাওয়ার চঞ্চলতা।
তুমি নিয়ে আস চারদিক বর্ণিল ফুলের সম্ভার,
ফুলেফুলে মৌমাছি ভ্রমরের গুনগুন সমাহার।
মক্ষিকা ব্যস্ত ফুলে ফুলে মধু আহরণে,
গন্ধ পেয়ে ভ্রমর নাচে গুনগুন গুঞ্জনে।
কৃষ্ণচূড়া,রাধাচুড়া,পলাশ,কুসুম ও কাঞ্চন ফুল,
ফুটে মহুয়া,হিমঝুরি,পলক, জুই ও শিমুল।
ঝরাপাতা শেষে গাছেগাছে দেখা যায় নতুন পাতা,
বনের গাছে গাছে ফুল দুরন্ত ফোটানোর প্রতিযোগিতা।
গাছের শাখায় ডাকে কোকিল বউ কথা কও,
লেজ উঁচিয়ে শীষ দিয়ে উঠে দোয়েল পাপিয়াও।
কৃষক চষে রবিশস্য বরোধান, গাছে আমের মঞ্জরী,
মৃদুমন্দ বাতাসে ফুলসুবাসে ভরে উঠে দিকচারি।
শর্ষেক্ষেতে ভরে ওঠে নাদুস নুদুস শর্ষেদানা,
উন্মুক্ত আকাশ মনে হয় যেন বধুর নীলাম্বরখানা।
বাসন্তি পোশাকে যুবতি যায় চারুকলা বকুলতলা,
খোঁপায় গাঁদাফুলে কিশোরীর অপরুপ রোমাঞ্চকতা।
ভর্তা খেয়ে মজা লাগে কুল ও কাঠালের মুঁচি,
চরক,বিজু,গাজন পালাগানে শেষ চৈত্রসংক্রান্তি।
নানান ব্যবসায়ীর দোকানে চলে নব হালখাতা,
বিশেষ ছাড়ে দ্রব্য বিক্রয়ে ব্যস্ত বিক্রেতা।
বঞ্চিত ভালোবাসায় জেগে ওঠে কত বিরহ ব্যথা,
প্রেমিক প্রেমিকার মনে জাগে শত নাবলা কথা।
দক্ষিনা সমীরণে বসে আমি উন্মুক্ত নদী তীরে,
লেখি ভালবাসার কবিতা শত পুঞ্জিভুত মনের মুকুরে।
তোমার আগমনে জাগে লেখনী র অনুপ্রেরণা,
বসন্ত মোদের প্রাণোচ্ছল হৃদয়ের ভাবনা।
তোমার আগমনে কবিরা কত যে কাব্য লেখে,
তোমার পদার্পণে নতুন ভাবনার দুয়ার খোলে।
বসন্ত তুমি বারবার এসো মর্ত চরাচরে,
তোমার উৎসবে মেতে উঠুক শহর গ্রামান্তরে।
★★★★★★★★★★★★★★★★