শহীদুল ইসলাম শহীদ,পঞ্চগড়।। উত্তরবঙ্গের সম্ভাবনাময় চা শিল্পকে বাঁচাতে একশ কোটি টাকার প্রণোদনা দাবি করে ৫০ কোটি ক্ষুদ্র চা চাষীদের প্রত্যেক কেজির জন্য পাঁচ টাকা করে, এক কোটি করে জ¦ালানিসহ বিদ্যুতের জন্য ২৮ টি কারখানাকে বরকে কোটি করে ২৮ কোটি, চা নার্সারী উৎপাদিত প্রত্যেক চারার জন্য পাঁচ টাকা হিসেবে নার্সারী মালিকদের ১০ কোটি এবং প্রশিক্ষণ, তদারকি ও মনিটরিংয়ের জন্য ১২ কোটি টাকা চা বোর্ডেকে প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।
বহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘‘উত্তরাঞ্চলের চা শিল্পের সম্পৃক্ত অংশীজনদের সাথে চায়ের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ করণীয় ও চা আইন-২০১৬ অবহিতকরণ’’ বিষয়ক কর্মশালায় এ সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া প্রণোদনার পাশাপাশি নিলাম মার্কেটে সর্বনিম্ন প্রতিকেজি তৈরি চা পাতার মূল্য ১৭০ টাকা নিধারর্ণ, কালোবাজারে অবৈধভাবে চা বিক্রি বন্ধ, কাঁচা চা পাতার মূল্য বৃদ্ধি, নানা অজুহাতে কাঁচা চা পাতার কর্তন বন্ধ, বিনামূল্যে প্রুনিং, প্লাকিং মেশিন প্রদান করার সুপারিশও করা হয়েছে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম বলেন, গুনগত মান সম্পন্ন চা উৎপাদনের বিকল্প নেই। অবৈধভাবে চা বিক্রি বন্ধ, সবাইকে চা আইন মেনে চলার আহবান জানিয়ে বলেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে দাম নির্ধারণমান অনুযায়ী নিলাম মার্কেটে তৈরি চা পাতার মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। গত বছর দেশে ১০৩ মিলিয়ন চা উৎপন্ন হয়েছে। যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় প্রায় ১৫ মিলিয়ন চা বেশি উৎপন্ন হয়েছে। বিদেশে চা রপ্তানি বাড়াতে পারলে চা শিল্পের বিরাজমান সংকট কেটে যাবে। প্রণোদনার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে উল্লেখ করে চা চাষীদের প্রশিক্ষণ অব্যাহত আছে, প্রুনিং, প্লাকিং মেশিন দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো দেওয়া হবে। চায়ের ক্রান্তিকালে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে। উৎপাদকরা দাম পাচ্ছে না। সবাই যেন যৌক্তিকভাবে আনুপাতিক হারে সুবিধা পায় সে লক্ষ্যেই চা বোর্ড কাজ করছে। তিনি উত্তরাঞ্চলে চায়ের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য গুণগতমান সম্পন্ন চা উৎপাদন, চা আইন-২০১৬ যথাযথভাবে অনুসরণ করে চা উৎপাদন,প্রক্রিয়াজাতকরণ, ও বিপননের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া সবুজ চা পাতার ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির বিষয়ে চা বোর্ড আন্তরিকভাবে কাজ করছে। চা আইন মেনে চলার আহবান জানিয়ে বলেন, কেউ আইন ভঙ্গ করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে আইন অমান্য করায় কয়েকটি কারখানার লাইসেন্স ও ওয়্যার হাউজের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। আরো বাতিল করার প্রক্রিয়া চলছে।
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ চা বোর্ড আয়োজিত এ কর্মশালায় স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যান্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি আমিরুল হক খোকন, কারখানা মলিকদের পক্ষে নিয়াজ আলী চিশতি, মনসুর আলী, মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন প্রধান, চা বাগান মালিক রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ ও সরকার হায়দার বক্তব্য দেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রিয়াজউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
কর্মশালায় চা বোর্ডের কর্মকর্তা, চা বাগান মালিক, কারখানা মালিক, ক্ষুদ্র চা চাষী, ব্রোকার হাউস ও ওয়্যার হাউজ প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীসহ চা সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। #