ষ্টাফ রিপোর্টার:-একটি বিকাশ নাম্বারের সূত্র ধরেই চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর ফটোগ্রাফার শাওন বড়ুয়া হত্যাকাণ্ডের একদিন পরই রহস্য উদঘাটন করেই পুলিশ সুকৌশলে ৫ আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. ইমতিয়াজ আলম মুরাদ, আশহাদুল ইসলাম ইমন, মো. তৌহিদুল আলম, মো. বাহার ও মো. আলমগীর।মূলত এরা ৫ জন মিলে শাওনের দামি ক্যামেরা ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। কিন্তু ক্যামেরা না দেয়ায় তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তারা।সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আসামি ইমন বিকাশে টাকা পাঠাচ্ছে নিহত ফটোগ্রাফার শাওন বড়ুয়ার কাছে। মূলত এই ছবির সূত্র ধরেই বিস্তৃত তদন্ত থেকে উদঘাটন করা হলো চাঞ্চল্যকর হতাকাণ্ডের রহস্য।পুলিশ জানায়, পাঁচ আসামি মুরাদ, তৌহিদ, বাহার, আলমগীরকে নিয়ে আরশাদুল আলম ইমন পরিকল্পনা করে। উদ্দেশ্যে ফটোগ্রাফার শাওনের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার। শাওনের ফেসবুক পেইজ থেকে নাম্বার নিয়ে বিকাশে ৫০০ টাকা অগ্রিম পাঠায়। আসতে বলে চট্টগ্রাম নগরীর কাপ্তাই এলাকায়। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অনন্যা আবাসিক এলাকায় গেলে তার মোটরসাইকেল আটকে দামি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তারা। না দিলে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে প্রধান আসামি ইমতিয়াজ আলম মুরাদ নিহত শাওনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। পরে সবাই ক্যামেরা নিয়ে পালিয়ে যায়।আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আড়াইটার দিকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ।সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পঙ্কজ দত্ত বলেন, মুলত: তাদের সবার উদ্দেশ্য ছিল ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া। কিন্তু ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে খুন হয় শাওন। তবে ছুরি দিয়ে ৬টি আঘাত করেছে মুরাদ।ঘটনার পর পরই তদন্তে মাঠে নামে পুলিশ। বুধবার ভোরে নগরীর কাপ্তাই থেকে প্রথমে ইমনকে গ্রেফতার করে । পরে তার দেখানো পথ ধরে অপর আসামিদের গ্রেফতার করা হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে।
ভিকটিম শাওন বড়ুয়া (২৩) চট্টগ্রাম এমইএস কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষে পড়ালেখা করতেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরে বিয়ের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করতেন।গত সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভিকটিম শাওন বড়ুয়াকে চান্দগাঁও থানাধীন কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় একটি গায়ে হলুদের প্রোগ্রামে ফটোগ্রাফির কথা বলে আসামিরা।তিনি আরও বলেন, এরপর কৌশলে শাওনকে রাত ১০টার দিকে চান্দগাঁও থানাধীন অনন্যা আবাসিক এলাকায় নিয়ে যায় তারা। এরপর আসামি মো. ইমতিয়াজ আলম মুরাদ (২১) ভিকটিমের সঙ্গে থাকা ক্যামেরার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে বাধা দেওয়ায় আসামি মুরাদ ভিকটিমের মাথায়, বুকে, পিঠে ও বাম পায়ের রানের অংশসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে ছুরিকাঘাত করে। এরপর শাওনের সঙ্গে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।পঙ্কজ দত্ত বলেন, মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে খবর পেয়ে পুলিশ শাওনের মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ওই ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে।