এম,সফিউল আজম চৌধুরী :-পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার ইছানগর এলাকায় এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গুদামের আগুন।
আজ বুধবার এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রায় ৪২ ঘণ্টা চেষ্টাতেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।আগ্নেগীরির মত গুদামের ভেতরে আগুন জ্বলছে পুরোদমে।দোষিত ধোঁয়া ছড়াচ্ছে পুরো এলাকায়।পানি মিশ্রিত চিনির কাঁচা রাসায়নিকের গলিত পোড়া বর্জ্য গুলো কারখানার ড্রেন দিয়ে সোজা গিয়ে পড়ছে কর্ণফুলিতে নদীতে। ফলে কর্ণফুলী নদীর পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। আর অপরিশোধিত চিনি পোড়ার ধোঁয়ায় লোকজনের চোখ মুখ জ্বলছে,বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধও।ফলে শ্বাসকষ্ট রোগীদের চরম অসুবিধা হচ্ছে। সরজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, আজ সকাল ১০টায় দেখা যায়, ওই সুগার মিলে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতেছে। মিল হতে নির্গত বিষাক্ত পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ে নদীর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।আগুন বাইরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, মূল ফটক থেকে গুদাম পর্যন্ত পুরো রাস্তায় অপরিশোধিত চিনি গলে লালচে কালো কাদার মতো তরল ছড়িয়ে আছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি ছিটাচ্ছেন। আগুনের বিস্তার ঠেকাতে গুদামের মুখে দেয়া হয়েছে বালি। গুদামের ছাদের বেশিরভাগ টিন কালো হয়ে বেঁকে গেছে। ধোঁয়া ছড়াচ্ছে আশপাশে। কারখানা এলাকার ভেতরের রাস্তায় জমা চিনি গলা আস্তরণ এস্কেভেটর দিয়ে সরানো হচ্ছে। অপরিশোধিত চিনির ধোঁয়ার তীব্রতায় উপস্থিত লোকজনের চোখ জ্বলছে।কারখানার ভিতর কোন সংবাদ কর্মী কে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না,ফলে তথ্য সংগ্রহ করে জনসমক্ষে প্রকাশ করা যাচ্ছে না ভিতরের অবস্থা। বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়,গুদামে যে ধরনের আগুন নেভানোর ব্যবস্থাপনা দরকার তার সিকি ভাগ ও ব্যবস্হা ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এলেও ওপর থেকে পানি ছিটানোর সুযোগ পায়নি। চারদিক থেকে বদ্ধ গুদামে উত্তপ্ত টিনের ছাদ কেটে ভেতরে ঢোকারও সুযোগ ছিল না। অল্পকিছু ফায়ার এক্সটিংগুইশার থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করা যায়নি। কারখানার আশপাশে ফায়ার হাইড্রেন্ট দরকার। ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকলে এতো বেগ পেতে হতো না। আগুন নেভানো আরও সহজ হতো।এখানে ফায়ার সেফটি ইনসিকিউরড। কেননা, গোডাউনের ভেতরে ১২০০ থেকে ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আগুন জ্বলছে। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঢুকতে পারছেন না। কারণ আগুনের তাপমাত্রা বেশি।মিলের আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ব্যবহার হচ্ছে অগ্নিনির্বাপক রোবট ‘লুফ-৬০’। এ রোবট দিয়ে মিনিটে এক হাজার লিটার স্পিডে পানি ছিটানো হচ্ছে। চিনির কাঁচামালে দাহ্য পদার্থ থাকায় গুদামের ভেতরের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে।সূত্র জানায়, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও থাইল্যান্ড থেকে চিনির কাঁচামাল এনে এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলসের দুটি প্লান্টে পরিশোধন করা হয়। এর মধ্যে প্লান্ট-১ এর উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৯০০ টন এবং প্লান্ট-২ এর উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ টন। থাইল্যান্ড এবং ফ্রান্সের প্রযুক্তি ও কারিগরি সহায়তায় কারখানাটি পরিচালিত হচ্ছে।