গোলাম রাব্বানী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ৮ নং নন্দুয়ার ইউনিয়নের (মীরডাঙ্গী) বাজারে আট আনার পেঁয়াজু বিক্রী করছেন এনামুল হক (৮৫) ।
শনিবার ৮ (ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার সময় গিয়ে দেখা যায় বৃদ্ধ এনামুল হক মানুষটি তার দোকানে একটি সিলভারের থালায় গরম গরম পেঁয়াজের পিঁয়াজু বানিয়ে রেখেছেন। বৃদ্ধের দোকানে গেলে একটি জিনিস সবার চোখে পড়বে সেইটা হলো তার এখনো আগের রেডিওটা রয়েছে। তিনি ৭৪ সাল থেকেই আট আনার পেঁয়াজু বিক্রী করে সংসার চালাচ্ছেন | বৃদ্ধ এনামুল হক কর্মব্যস্তার মধ্যে প্রতিদিন দেশের বিবিসি খবর শুনেন ভাঙ্গা রেডিওটির মাধ্যমে। দেশের মানুষ যেইখানে দেশ- বিদেশের খবর শুনেন ইন্টারনেটের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আর ইউটিউবের ভিডিও দেখে। সেইখানে এই বৃদ্ধটি তার ভাঙ্গা রেডিওতেই খবর শুনতে পান দেশ বিদেশের। এনামুল হকের ৩ ছেলে ৩ মেয়ে নিয়ে পুর্ব ভোলাপাড়ায় ভাঙ্গাচোড়া বাসায় বসবাস করছেন | বর্তমান সময়ে পেঁয়াজের পিঁয়াজু কিনতে ২/৫ টাকা লাগলেও এনামুল হক কিভাবে আটঠানার পেঁয়াজের পিঁয়াজু বিক্রি করেন ক্রেতাদের কাছে। দেশে সব কিছু জিনিসের দাম বাড়লেও এনামুল হকের পেঁয়াজুর মুল্যের তালিকা বাড়েনি | এনামুলের ভাষ্যমতে– লাভ লোকসানের হিসাব আমার কাছে নাই কম মুল্যে বিক্রী করে ক্রেতার মন জোগাড় করাই আমার চাওয়া পাওয়া ।
স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে জানা যায় যে, এনামুল হক নাকি স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এই আটঠানার পেঁয়াজের পিঁয়াজু বিক্রি করে আসছেন। বৃদ্ধের কথা দেশ বদলে যেতে পারে কিন্তু আমি স্মৃতিটুকু এখনো ধরে রেখেছি জনসাধারণ মানুষের কাছে। পেঁয়াজের পিঁয়াজু এত সস্তা দামে বিক্রি করার কারণটা আমার আমি এই প্রজন্মের ছেলে- মেয়েদের দেখা চাই আমি কিভাবে আগে আটঠানার পেঁয়াজের পিঁয়াজু বিক্রি করতাম । বৃদ্ধের দোকানে দূর থেকে ছুটে আসেন বিকাল বেলা সু- স্বাদু মজাদার পেঁয়াজের পিঁয়াজু খাওয়ার জন্য। অন্যদিকে স্কুল, কলেজের ছাত্র- ছাত্রীরা কম টাকায় পেঁয়াজের পিঁয়াজু পাওয়া তারাও খেতে আসেন বৃদ্ধের দোকানটিতে। তারা সুস্বাদু মজারদার পেঁয়াজের পিঁয়াজু নিজেরাই খাই এবং পরিবারের প্রিয়জনদের জন্য নিয়ে যান। বৃদ্ধের দোকানে বিকেল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত পেঁয়াজের পিঁয়াজু বিক্রি করার পাশাপাশি পাওয়া যায় গরম গরম লাল চা আর দুধ। সেই সাথে পাওয়া যায় দেশীয় মুরগি আর ব্রয়লারের গরম ডিম |