নিজস্ব প্রতিবেদকঃউপর থেকে দেখতে ভদ্র ও জনবান্ধব নেতার মুখোশের আড়ালে এ যেন এক মহাকালের মহা সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি।
প্রসঙ্গতঃ ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য বিএনপি ত্যাগ করে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জয়নাল আবেদীন কে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সিদ্দিকুর রহমান।
নির্বাচনে জয়লাভ করার পর আচরণবিধি ভঙ্গ করে শতশত নেতাকর্মী নিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিজয় মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী জয়নাল আবেদীন এর বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে হামলা এবং লুটপাট চালায়।
এসময় শেখ মুজিবুর রহমান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি এবং নৌকা প্রতীক সম্বলিত তোড়ণ ভাংচুর করা হয়।
পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মামলা করলে গ্রেফতার এড়াতে স্থানীয় সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এর সহযোগিতায় জাতীয় পার্টির এক ঊর্ধ্বতন নেতার ঢাকার বাসায় আত্মগোপনে থেকে বেরিয়ে এসে চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহণের পর ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে নিজের পরাজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়নাল আবেদীনকে কোণঠাসা করে তার নৌকা প্রতীক ছিনিয়ে নিয়ে পূণরায় চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের হর্তাকর্তা ও রমেশ চন্দ্র সেন এর জেরক্স কপি ইমদাদুল হক এর আশির্বাদ এবং পরামর্শে জাতীয় পার্টির প্রায় ২০০জন নেতাকর্মী নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেও নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান,
ফ্যাসিস্ট হাসিনার সর্বশেষ সময়ে অবৈধ নির্বাচনগুলো বৈধ করতে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেগুলো বৈধ করার নায়ক এসব সুযোগসন্ধানী বাটপাররা।
সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর ক্ষমতার পরিবর্তন এর সাথে সাথে আওয়ামী লীগের এই দুঃসময়ে ইমদাদুল হক/জয়নাল আবেদীন দু’জনই আত্মগোপনে থাকলেও সিদ্দিকুর রহমান থেকে গেছেন বহাল তবিয়তে। সম্পূর্ণ ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বিএনপির এক নেতা জানান,
এসব রাজনৈতিক বাটপার যতদিন মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াবে ততদিন রাজনীতিতে শুদ্ধতা আসবে না।
পুলিশ-প্রশাসন জয়নাল আবেদীন এর খোঁজে বাড়িতে গেলেও সিদ্দিকুর রহমান অলিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করছেন। এখনও তিনি আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে থাকলেও ইমদাদুল হক এর দুঃসময়ে তাকে ভুলে গিয়ে পুরনো ঘর বিএনপিতে ফিরে যাওয়ার জন্য তদবির শুরু করেছেন।
আত্মগোপনে থাকা
আওয়ামী লীগের বেশকিছু নেতাকর্মীর সাথে যোগাযোগ করা হলে এক নেতা দৈনিক ঝড় প্রতিবেদককে জানিয়েছেন,
ঘনঘন রং পাল্টে অভিভাবক পরিবর্তন করে রাজনীতির মাঠে টিকে থাকার এই নোংরা ধান্ধা সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি সিদ্দিকুর রহমান এর বহু পুরোনো কৌশল।
আওয়ামী লীগের সুসময়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন এমন একাধিক ব্যক্তি জানান,
সিদ্দিকুর রহমান’রা যাতে আবারও নতুন করে কোনো দল বা নেতার সাথে প্রতারণা করতে না পারে সেজন্য তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ থাকার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান,
সিদ্দিকুর রহমান এর মতো সুবিধাবাদী ও সুযোগসন্ধানী নেতাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আত্মগোপনে থাকা অনেক নেতার গোপন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে জানা গেছে।