ফজলার গাইবান্ধা প্রতিনিধি :গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়ন বিএনপির অনুষ্ঠিত দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি পদে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীই ২১৭ করে সমান ভোট পেয়েছেন। অথচ চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণায় প্রভাবিত হওয়াসহ নানা অনিয়ম ও কৌশলের অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পরাজিত সভাপতি প্রার্থী মাসুদ রানা প্রামাণিক।
রবিবার (৯ ফেব্রুযারি) দুপুরে সাদুল্লাপুর প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাসুদ রানা প্রমাণিক।
লিখিত বক্তব্যে মাসুদ রানা প্রমাণিক বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ধাপেরহাট ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে স্থানীয় হিংগারপাড়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে ৪৫৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৪৫৫ জন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন।
অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের নির্বাচনে সভাপতি পদে চশমা প্রতীক নিয়ে আমি মাসুদ রানাসহ ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করি। কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির আহবায়ক জেলা বিএনপির উপদেষ্টা সামিয়ূর রহমান ও অপর দুই সদস্যের তত্বাবধানে ভোট গ্রহন করা হয়। কিন্তু গণনা শেষে তার (চশমা) প্রাপ্ত ভোট ২১৭ ও অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুর রহমান মিলনের (আনারস) প্রতিকে প্রাপ্ত ২১৭ ভোট হয়। এতে সভাপতি পদের দুই প্রার্থীর সমান ভোট হওয়ার কারণে ফলাফল অমিমাংসিত রাখলেও সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের বিজয়ী ঘোষণা করে দ্রুত ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়কসহ অন্যরা।
মাসুদ রানা প্রমাণিক আরও বলেন, পরদিন গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে নির্বাচন কমিটির আহবায়ক সামিয়ূর রহমান তাকে ফোনে জানান, সভাপতি পদের চুড়ান্ত ফলাফলের জন্য রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের নিকট বসা হবে। এজন্য তিনি আমাকে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় উপস্থিত থাকতে বলেন। সেখানে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১টায় আমি উপস্থিত হলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক আমার একটি বৈধ ভোট বাতিল করেন। পরে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুর রহমান মিলনকে সভাপতি পদে এক ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন। আমি পরবর্তীতে জানতে পারি যে উক্ত বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী আমিনুর রহমান মিলনের নিকট আত্মীয়। যার সাথে যোগসাজসে এই বিতর্কিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে মাসুদ রানা আরও বলেন, শুধু তাই নয়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল বেলায় স্থানীয় এক ব্যক্তি ভোট কেন্দ্রের পাশে আমার চশমা প্রতীকে সিল মারা একটি ব্যালট পেপার কুড়িয়ে পান। এ ব্যালটটি সংগ্রহ করে কাউনিয়ায় নিয়ে গিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ককে দেখানো হয়। কিন্তু তিনি এ ভোটটিও আমলে নেননি। মূলত তিনি বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়ে নানা অনিয়ম ও কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আমাকে পরাজিত ঘোষণা করেন। তাই মাসুদ রানা এ ফলাফল বর্জন করে তার বাতিল করা ভোটটি বৈধ ঘোষণার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনের সময় মাসুদ রানা প্রমাণিকের সঙ্গে ধাপেরহাটের দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, দুই প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ার কথা স্বীকার করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক জেলা বিএনপির উপদেষ্টা কৃষিবিদ সামিয়ূর রহমান জানান, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পরামর্শ মোতাবেক এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।