শ্যামলী আকতার, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা বিতারিত হলেও তাদের শুণ্যস্থান পূরণ করতে খুব বেশি সময় লাগেনি। একটি রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা ফ্যাসিস্টদের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়ে দখল চাঁদাবাজি লুটপাট আর যতরকম প্রশাসনিক অনিয়ম দূর্নীতি আছে তাতে সহায়তা করে যাচ্ছে। তাদের কারণেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টেন্ডারে তাদেরই দোসর দ্বারা নানা প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ফায়দা লুটছে। তারা এতটাই ক্ষমতাবান যে তাদের সামনে প্রশাসনও অসহায় হয়ে পড়েছে।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাপাতালে কিছুদিন আগে রোগীদের জন্য খাদ্য/খাদ্য সামগ্রী(পথ্য) সরবরাহের টেন্ডার আহবান করা হয়। এখানে একটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয় যে, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে টেন্ডার আহবানের দিন হতে বিগত ৫ বছরের মধ্যে ৩ বছর খাদ্য(পথ্য) সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, কিন্তু গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম কারিগর স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এলাকার কোন ঠিকাদারকে হাসপাতালে ঢুকতে দেননি। তিনি তার আত্মীয় স্বজনকে এমন একজন ঠিকাদারের নামে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন যে ওই ঠিকাদারকে কেউ কখনও দেখেননি। ফলে এই শর্তের বেড়াজালে আটকে স্থানীয় কোন ঠিকাদার উক্ত টেন্ডার অংশ নিতে পারেননি। তারা বিষয়টির সুরাহা চেয়ে জেলা প্রশাসক এর নিকট আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক উক্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন। সিভিল সার্জন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ ফিরোজ জামানকে নির্দেশ দেন।বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ঠিকাদাররা ই জি বি প্রধান দপ্তর ঢাকার সাথে কথা বললে সেখান থেকে জানানো হয়“ সংশ্লিষ্ট জেলার ঠিকাদারদের দরপত্র দাখিলের সুযোগ দিয়ে শর্তাবলী দিতে হবে এবং যে সকল প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ঠিকাদার নেই সেগুলোতে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেমিলার মালামাল সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকলেই তিনি টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করতে পারেন ” । এব্যাপারে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইতিবাচক মতামত দিলে তাকে বদলী করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ডাঃ ফিরোজ জামান ৩ বছরের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও একটি কাজে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার সরবরাহ অভিজ্ঞতা দেখাতে হবে, ব্যাংকে ১ কোট ৪০ লক্ষ টাকা ৭ দিন ছিল এমন একটি প্রত্যায়ন দাখিল করতে হবে মর্মে আজগুবি শর্ত জুড়ে বিষয়টিকে আরো কঠিন করে দরপত্র আহবান করেন। এই শর্তের ফলে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড় এলাকার কোন ঠিকাদরই উক্ত টেন্ডারে অংশগ্রহন করতে পারবেনা।এমন জটিলতা তৈরির ফলে টেন্ডার প্রকৃয়া বিঘিœত করে ফ্যাসিস্টদের রেখে যাওয়া ঠিকাদারের মাধ্যমেই সরবরাহ কাজ চলতে থাকবে। এটা চালিয়ে চালিয়ে যাওয়ার স্বার্থেই ফ্যাসিস্টদের আর এক দোসর বলে পরিচিত হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ ফিরোজ জামান এই টেন্ডারে বারে বারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলছেন। জানা গেছে, পূর্বের সরকারের রাজনৈতিক পান্ডারা টেন্ডারের অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য এমন একটি অপকৌশল নিয়েছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর শুধু রাজনৈতিক পরিচয় আর ব্যক্তির পরিবর্তন ঘটে নতুন একটি রাজনৈতিক দল ও তাদের পান্ডারা জায়গা নিয়ে নিয়েছে। তারাই এই প্রকৃয়া চালিয়ে যেতে ডাঃ ফিরোজ জামানের মাধ্যমে নানারকম অপকৌশল করে আসছেন।
স্থানীয় ঠিকাদার এবং সাধারণ মানুষ মনে করেন অবিলম্বে ওই রাজনৈতিক দলটি এবং তাদের নব্য সহযোগী ফ্যাসিস্টের দোসর ডাঃ ফিরোজ জামানের হাত থেকে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাপাতাল মুক্ত করে যৌক্তিক শর্তাবলী সংযুক্ত করে টেন্ডার আহবান করা উচিৎ নইলে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলের মতোই লুটপাট চলতে থাকবে তা কারোই কাম্য নয়।