।। ব্যারিস্টার নুর উস সাদিক ।।
প্রথমত, ধর্ষণ এবং বিবাহের প্রতিশ্রুতিতে ধর্ষণ এক বিষয় নয়। ধর্ষণের সাথে অসম্মতিতে শক্তি প্রয়োগ, জোর-জুলুম জড়িত। প্রতিশ্রুতির সাথে প্রতিশ্রুতি না রাখা বা ঠকানো, প্রতারণা করা, বঞ্চিত করা জড়িত।
বিবাহ বা যে কোন প্রলোভনেই হোক সম্মতি আদায় করে যৌন সম্পর্ক কখনোই ধর্ষণের আওতা ভুক্ত হতে পারেনা। এতে অনেক কিছু বিবেচ্য থাকে, যে সম্মতি দিয়েছে তার বয়স, শিক্ষা, অবস্থান এবং আসলেই অই অবস্থায় তার বয়সের তার অবস্থানের অন্য কেউ এই সম্মতি দিত কিনা ইত্যাদি অনেক কিছুই বিবেচ্য।
একজন দেহজীবী হুট করে এসে যদি বলে, অমুক আমাকে বিয়ে করার প্রলোভনে ধর্ষণ করেছে! প্রমানের প্রশ্ন তো আসবে পরে, আগে কি হবে? যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে সে প্রথমেই সামাজিক ভাবে ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত হবে, পুলিশ ধরে এনে জেলে পুড়বে ধর্ষণ মামলায়!
প্রেমিক-প্রেমিকা দিব্বি প্রেম করছে, হুট করে প্রেমিক জানতে পারলো যে প্রেমিকা এরকম আরও দুচারটি প্রেমের সাথেও জড়িত। এক্ষেত্রেও প্রেমিক ব্রেক আপ করলে প্রেমিকার বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করার সুযোগ থাকে। প্রেমিকা বলতেও পারে, টাকা দাও নইলে মামলা করবো।
আজকাল ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে এই ধরনের অপরাধ বেশী হচ্ছে, ফেসবুক বা অন্য মাধ্যমে একটি চক্র মেয়েদের দিয়ে শিকার সংগ্রহ করে প্রেমের খেলায় ফাঁসিয়ে বলে, টাকা দাও নইলে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা দিব, অনেক ক্ষেত্রে মামলা দিয়ে তারপর আপোষে আসে!
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ একটি কালো আইনি শব্দ। এটির যথেচ্ছ অপব্যবহার হয়, হচ্ছে, হওয়ার যথেষ্ট সুযোগও আছে।
সর্বপ্রথম ধর্ষণ থেকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণকে আলাদা করতে হবে। “বিয়ের প্রলোভনে সম্মতি আদায়” কে ধর্ষণ হিসেবে না দেখে “অপরাধ মূলক বা প্রতারণা পূর্বক সম্মতি আদায় জনিত যৌন সম্পর্ক” হিসেবে দিয়ে কিছু গাইড লাইন থাকলে “ধর্ষণ” শব্দটাও যেমন হেয় হয়না তেমনি ধর্ষণের নামে এই কালো আইনের অপব্যবহার রোধ করাও সম্ভব হতে পারতো-
একটি কালো আইন পাশ হলো আবার আইনে অনভিজ্ঞদের দ্বারা!