শহীদুল ইসলাম শহীদ,পঞ্চগড়।।রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার মধ্যে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের চিকিৎসা খাতে বৈষম্য দূরীকরণে চীনের অর্থায়নে নির্মিতব্য ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতালটি পঞ্চগড় জেলায় স্থাপনের দাবিতে শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকাস্থ পঞ্চগড় জেলা সমিতি। মানববন্ধনে জাগপা-র মূখ্য সমন্বয়ক রাশেদ প্রধান উপস্থিত থেকে পঞ্চগড় জেলা সমিতির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। মানববন্ধনে পঞ্চগড় জেলা বাপা-র সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের, সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ ড. আব্দুর রহমান, সহ-সভাপতি আইনুল হক, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক খালেদ শামস প্রধান রূম্মান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তার প্রমূখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন,পঞ্চগড় জেলা রংপুর বিভাগের সর্ব উত্তরের সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। এ জেলার তিন দিকে ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং নিকটেই নেপাল ও ভুটান অবস্থিত। এমন একটি কৌশলগত ও পর্যটন সম্ভাবনাময় জেলায় স্বাধীনতার ৫ দশক অতিবাহিত হবার পরও এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ কিংবা কোন বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়নি। পঞ্চগড়ে বর্তমানে একটি ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল এবং কয়েকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। তবে এই সকল প্রতিষ্ঠানে পযার্প্ত বেড সুবিধা, চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদিসহ দক্ষ জনবল সংকটের ফলে এ জেলার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষকে নুন্যতম চিকিৎসার জন্য ছুটে যেতে হয় দিনাজপুর, নীলফামারী কিংবা রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে, যা কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হ্নদরোগ, দুর্ঘটনা বা জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের দিনাজপুর, রংপুর, ঢাকা অথবা পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের উপর নির্ভরশীল হতে হয়। এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হয় এবং অনেক সময় দূরত্বের কারণে জীবনহানীও ঘটে।
পঞ্চগড় একটি দূরবর্তী, প্রান্তিক ও প্রত্যন্ত জেলা। যেখানে বর্তমানে বড় কোনো টারশিয়ারি হাসপাতাল নেই। এখানে এখনো বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা অনুপলব্ধ। এই প্রকল্প স্থানীয় জনগণের মধ্যে চীনের ইমেজকে উন্নত করবে। সাধারণ রোগের চিকিৎসার জন্য মানুষকে শিলিগুড়ি, রংপুর বা ঢাকা পর্যন্ত যেতে হবে না। ঠাকুরগাঁও, পার্বতীপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার রোগীরাও উপকৃত হবেন। পঞ্চগড়ে ইতোমধ্যে ঢাকা—পঞ্চগড় রেল লাইন এবং সংযোগ সড়ক উন্নত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশও স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। এর মাধ্যমে হাসপাতালের জন্য লজিস্টিক সাপোর্ট ও রোগী পরিবহন সহজ হবে, এমনকি ভারতের কিছু সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষও সহজেই চিকিৎসা নিতে আসতে পারবে। ১০০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবায় বিপ্লব ঘটাবে এবং সরকারি খরচও বাঁচাবে। এছাড়া নেপাল-ভুটানের অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত। এদের যাতায়াত সহজ হবে। পঞ্চগড় জেলা সমিতি, ঢাকা’র পক্ষ থেকে জোরালোভাবে দাবী জানিয়ে জেলায় চীনের অর্থায়নে নির্মিতব্য ১০০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতালসহ একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের চিকিৎসা খাতে বৈষম্য দূর করুন এবং পঞ্চগড়বাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে। #