শ্যামলী আকতার, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চলছে তুঘলকি কান্ড। টেন্ডার আহবানের ৩মাস পরেও দেয়া হচ্ছেনা কার্য্যাদেশ। ঠিকাদারদের ফেরত দেয়নি জামানতের অর্থ। অসুস্থ্যতার অজুহাতে হাসপাতালে আসেন না তত্বাবধায়ক। অফিসে কথা বলার জন্য পাওয়া যায়না কোন দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ। এমন যখন অবস্থা তখন ক্ষোভ জমে উঠছে স্থানীয় ঠিকাদার ও সচেতন মহলে। তবে হাসপাতালের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানান এ অচলবস্থা পরিকল্পিতভাবেই তৈরি করা হয়েছে পতিত স্বৈরাচারি আওয়ামী সরকারের নিযুক্ত ঠিকাদার আর বর্তমানে একটি রাজনৈতিক দলের কতিপয় পান্ডাকে সুবিধা দিতে।
জানা যায়, গত ১০ মার্চ ২০২৫ তারিখে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য,আনুষঙ্গিক ও বিবিধ সরবরাহের টেন্ডার আহবান করা হয়। টেন্ডারে কিছু জটিল ও মনগড়া শর্তাবলী আরোপ করায় এসকল শর্ত কোন ঠিকাদারের পক্ষেই পূরণ করা সম্ভব নয় জানিয়ে স্থানীয় ঠিকাদাররা জেলা প্রশাসক এবং তত্বাবধায়ক বরাবর শর্ত শিথিল করার জন্য আবেদন করেন। ঠিকাদাররা এটাও অনুরোধ করেন যে, পাশের জেলা দিনাজপুরের জেনারেল হাসপাতালে যে ধরনের শর্ত দেয়া হয়েছে তাদেরও সে মোতাবেক শর্ত দেয়া হোক। জেলা প্রশাসক ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ ফিরোজ জামান সাহেবকে উক্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে পার্শবর্তী জেলার একই হাসপাতালের চে ৫ গুণ বেশি শর্ত জুড়ে দিয়ে টেন্ডার আহবান করেন।
টেন্ডার জমা দেয়ার পর ৩ মাস অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত টেন্ডারের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। টেন্ডারের দিন হতে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক অসুস্থ্যতার অজুহাতে অফিসে আসছেন না, এমনকি কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে টেন্ডারের পর এক দিনের জন্যও হাসপাতালে পাওয়া যায়নি বলে ঠিকাদাররা জানান। দরপত্রের সাথে জামানত হিসেবে ঠিকাদাররা যে ব্যাংক ড্রাফট জমা দিয়েছিল তা এখন পর্যন্ত আটকিয়ে রাখা হয়েছে অথচ এর জন্য ঠিকাদারদের ব্যাংক সুদ গুনতে হচ্ছে। ব্যাংক ড্রাফট ফেরতের জন্য ঠিকাদাররা বহুবার অফিসে যোগাযোগ করলেও দায়িত্বশীল কাউকে না পাওয়ায় সেগুলো ফেরত পায়নি।
দরপত্রের ফলাফল ঘোষণা না করা হলেও হাসপাতালের বিভিন্ন সূত্র বলছে “একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাপে অজ্ঞাত ভাড়াটিয়া ঠিকাদারদের কাগজপত্রে দলীয় স্থানীয় ৪জন ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়েছে”। স্থানীয় ঠিকাদাররা দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ স্থানীয় ঠিকাদারদের কাজ না দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে ওই সূত্রটি তাদের জানান “শর্তপূরণ” হয়নি একারণে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে ভাড়াটিয়া ঢাকা ও বগুড়ার ঠিকাদারের নামে কাজটি দেয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। উল্লেখ্য উক্ত ভাড়াকরা ঠিকাদারদের ঢাকা থেকে এবং ঢাকার ঠিকানায় কাগজপত্র তৈরি করে নিয়ে আসা হয়েছে বলে ইজিবি পদ্ধতিতে দেখা যায়। স্থানীয় ঠিকাদারদের সাথে কথা বললে তারা জানান “ আমরা চাই টেন্ডারের কাগজপত্র সবার সম্মুক্ষে প্রকাশ করা হোক। কেউ যদি যোগ্যতা বলে এবং শর্তপূরণ সাপেক্ষে কাজ পেয়ে থাকেন তো আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমরা চাই সেই যোগ্য ঠিকাদারের কাগজপত্রগুলো সবার সামনে প্রদর্শন করা হো”। ঠিকাদাররা আরো জানন, এই পরিকল্পিত বিলম্বের কারণে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দেয়া বহিরাগত এবং অজ্ঞাত ঠিকাদারের নামেই এখন পর্যন্ত সরবরাহ কাজ চলছে। ঠিকাদাররা তাদের এ সকল অভিযোগ লিখিত আকারে স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের টেন্ডারের অনিয়ম বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও উক্ত টেন্ডারে অংশগ্রহণ করা স্থানীয় ও ভাড়াটে ঠিকাদারদের দাখিলকৃত কাগজপত্র সবার সন্মুক্ষে প্রকাশ সহ দ্রুত জামানতের ব্যাংক ড্রাফট ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঠিকাদাররা দাবি জানান।
প্রকাশক/সম্পাদক :- শাওন আমিন।। ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক :- মোঃ গিয়াস উদ্দিন।। নির্বাহী সম্পাদক :- ঝড় আমীন।। প্রধান কার্যালয় :- হালিশহর, চট্রগ্রাম। মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২০৬১১৬৩ ঢাকা কার্যালয়:-বাসা নং ৫১/৩,ধানমন্ডি ৩/এ, ঢাকা।-১২০৯ মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২৪১৫৮৫৩,+৮৮০১৫৮০৮২০৬৬৩,+৮৮০১৭১২০৬১১৬৩
E-mail :- newszhor@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত. বাংলাদেশ হোস্টিং