শহীদুল ইসলাম শহীদ,পঞ্চগড় ।।পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমুর একটি অনলাইন মিটিংয়ের অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। ওই ওডিওতে তাকে ইসলামী ব্যাংকে অগ্নিসংযোগ ও বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে বলতে শোনা গেছে।
শুক্রবার (১৬ মে) সকালে ৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও স্ক্রিন রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে আশরাফুল আলম এমু বলেন, আমি তো প্ল্যানিং নিচ্ছি- আমার এলাকায় যে কয়টা ইসলামী ব্যাংক আছে, এক রাতেই সব জ্বালিয়ে দেবো। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগ যদি আমাকে সাহস না দেয়, পাশে না থাকে, তাহলে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, ৪৯৫টি উপজেলায় যদি একসাথে রুখে দাঁড়াই, এবং প্রত্যেক উপজেলার বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ ১০ নেতার বাড়িতে আগুন দিই, তাহলে ওরা এমনিতেই ভেঙে পড়বে।
ভিডিওতে তাকে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও কথা বলতে শোনা যায়। বলেন, পুলিশ আমাদের সঙ্গে আছে। কিন্তু আমরা রাস্তায় না নামলে পুলিশ সহযোগিতা করবে না। আমার এলাকাতেও পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে ধরছে না- বিএনপি-জামায়াত চাপ দিলে তখনই ধরে।
তিনি অভিযোগ করেন, সাংগঠনিক কাজে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাকে বাধা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি নিজে সাংগঠনিক কাজ করতে গেলেও আমাদের নেতারা বাধা দিচ্ছেন, বলছেন পুলিশের হয়রানি বাড়ছে।
এই বিষয়ে আশরাফুল আলম এমুর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেবীগঞ্জে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এটিকে উসকানিমূলক ও সহিংসতার আহ্বান বলে উল্লেখ করেছেন।
দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন তোবারক হ্যাপি বলেন, বিষয়টি শুনেছি। দলীয়ভাবে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি বেলাল হোসেন বলেন, এ ধরনের বক্তব্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকি। প্রশাসনের উচিত এসব উসকানিদাতাকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা।
ইসলামী ব্যাংকে অগ্নিসংযোগের হুমকি প্রসঙ্গে দেবীগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পঞ্চগড় জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। ভিডিওটি পেলে দেখে প্রয়োজনীয়ে ব্যবস্থা নেবো।