হুসাইন মো: আরমান(রুহিয়া থানা প্রতিনিধি)।।ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১নং রুহিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে নেই কোনো এমবিবিএস ডাক্তার। ফলে প্রতিদিন প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য আসা শতাধিক রোগী সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের জনসাধারণের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার না থাকায় উপ-সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তাদের পরামর্শে চলে চিকিৎসা কার্যক্রম, যা অনেক সময় যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারে না। এতে সাধারণ রোগী যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তেমনি অনেক সময় তাদের ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
রুহিয়ার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, “স্ত্রীর জ্বর ও মাথাব্যথার জন্য রুহিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসি। কিন্তু এমবিবিএস ডাক্তার না থাকায় সঠিক পরামর্শ পাইনি পরিশেষে আমাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে যেতে হয়েছে।”
একই অভিজ্ঞতার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দা রানী আক্তার ,প্রতিদিন অনেক মানুষ এখানে আসে, কিন্তু একজন ডাক্তার পর্যন্ত নেই — এটা খুবই কষ্টদায়ক ও লজ্জাজনক । বিগত সরকারের আমলে ঠাকুরগাঁও ১ আসনের সাংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এর পৈত্রিক ভিটাবাড়ি রুহিয়াতে হলেও তার কাছে অনেকবার এই অভিযোগ দেওয়া হলেও কোন উন্নতির মুখ দেখে নাই এই রুহিয়া স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালটি। হাসপাতালে চারপাশের পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ এযেন মানুষের মলমূত্র ত্যাগের মহা স্থান। হাসপাতালের পরিবেশ এবং রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য একজন ভাল ডাক্তার একান্ত প্রয়োজন।
জানা গেছে, রুহিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমবিবিএস চিকিৎসকের একটি পদ অনুমোদিত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সেটি শূন্য রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, “এখানে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে। একজন ডাক্তার না থাকায় মানুষ ঠিকমতো সেবা পাচ্ছে না। বহুবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।”
রুহিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. হাবিব-উন-নবী বলেন, “সরকার নতুন নিয়োগ দিলেই এখানে একজন এমবিবিএস ডাক্তার যোগ দেবেন।”
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আবুল বাসার মো. সায়েদুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, “সরকার সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রথম দফায় ৩ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেবে। এরপর আরও ৪ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ হবে। তখন ঠাকুরগাঁও সদরসহ সব ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যায়ক্রমে এমবিবিএস ডাক্তার পদায়ন করা হবে।”
স্বাস্থ্যসেবার এই সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে রুহিয়ার মতো জনবহুল এলাকায় চিকিৎসক সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকেই।