চৌধুরী নুপুর নাহার তাজ,দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি।।
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর (উকিল পাড়া) গ্রামে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে পুকুরের পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, নিহত কিশোর আরাফাত হোসেন (১৩) স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ছাইদুল ইসলামের ছেলে। ১৫ জুন ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ, দুপুর অনুমান ১২টা ৩০ মিনিটে, গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমান ওরফে হবুল ইসলামের পুকুরে গোসল করতে যায় আরাফাত।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আরাফাতসহ মোট ৪-৫ জন শিশু একসাথে পুকুরে গোসল করতে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন ছিল অভিযুক্ত মোঃ রবিউল ইসলামের নিজের ছেলে, যে কিনা সাঁতার জানত না। এই শিশুটিকে পুকুরে নিয়ে আসায় রবিউল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং প্রতিশোধপরায়ণ আচরণে একে একে সকল শিশুর মাথা পানির নিচে চেপে ধরতে শুরু করে। কিন্তু শিশু আরাফাতকে সে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে পানির নিচে রাখে, যার ফলে শ্বাসরোধ হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরদিন ১৬ জুন, নিহত শিশুর পিতা মোঃ ছাইদুল ইসলাম খানসামা থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, রবিউল ইসলাম নির্মমভাবে তার শিশুপুত্রকে হত্যার উদ্দেশ্যে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় খানসামা থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং অভিযুক্ত গোবিন্দপুর গ্রামের একরামুল হকের ছেলে রবিউল ইসলাম (৪২) কে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ অনুযায়ী বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়। মামলার নম্বর-০৮, তারিখ-১৬/০৬/২০২৫ খ্রিঃ এবং জিআর নম্বর-৮১/২০২৫।
খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বাদীর এজাহার অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে।”
এদিকে, এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা জানান, আরাফাত ছিলো ভদ্র, শান্ত স্বভাবের এবং অত্যন্ত ভালো মনের একটি ছেলে। তার এমন নির্মম মৃত্যুতে সবাই স্তম্ভিত।
নিহতের পরিবার এবং স্থানীয়দের দাবি—এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।