বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃজাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল “যুগবার্তা ডট কম” রংপুর অফিসের এবং “দৈনিক মুক্ত খবর” পত্রিকার রানীশংকৈল উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ মহশীন আলী পেশাগত দায়িত্ব পালনের নিমিত্তে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় কতিপয় পর সম্পদ লোভী, অত্যাচারী, সন্ত্রাসী, দাঙ্গাবাজ, ভূমিদস্যু, জোর-জুলুমবাজ, জবরদখলকারী ব্যক্তি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুস সামাদ, সামাদের ছেলে নাসির, রানীশংকৈল উপজেলার পূর্ব রাতোর গ্রামের মৃত আকালু মোহাম্মদ এর ছেলে আব্দুল গফুর, গফুরের ছেলে সাগর, মৃত মকবুলের ছেলে মোজাফফর হোসেন, বড় রাতোর গ্রামের হাজি’র ছেলে রশিদুল ইসলামসহ আরো ৩০/৩৫ জন দুষ্কৃতি প্রকৃতির লোক দ্বারা লাঞ্চিত, অপমানিত ও মারপিটের শিকার হয়েছেন। ওই সময় তাঁর সাথে থাকা মোবাইল, ক্যামেরা, টাকা, আইডি কার্ড, মানিব্যাগ, মানিব্যাগে রক্ষিত ব্যাংকের চেক, বিভিন্ন কাগজপত্র সহ উক্ত ব্যক্তিগণ ছিনিয়ে নেয়।
গত ১১/৬/২৫ ইং তারিখে বিকাল অনুমান ৩:৪৫ ঘটিকায় রাণীশংকৈল উপজেলার পূর্ব রাতোর মার্ডার বস্তিতে উক্ত ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে রানীশংকৈল থানা’য় গত ১৬/৬/২০২৫ ইং তারিখে একটি মামলাও হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোঃ মহশীন আলী ও তাঁর মামলার এজাহার মূলে জানা যায় যে, গত ১১/৬/২৫ ইং তারিখে বিকাল ৩:৩০ ঘটিকায় মহশীন আলী পূর্ব-রাতোরে আগুন লাগার সংবাদ জানতে পেরে সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য যায়। সেখানে জনৈক মোতালেবের বাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকা দৃশ্য দেখে তা তাঁর ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করেন। ওই সময় কিছু মানুষ জানায়, যেই সকল লোক মোতালেবের বাড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে ঐ সকল লোকজন আবার মোতালেবের বাবা আতাবুর রহমান (আতা)’র ও তার ভাইদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালাচ্ছে। সেই কথা শুনে আতাবুরের বাড়ির সামনে মহশীন পৌঁছানো মাত্রই উক্ত ব্যক্তিগণ বলে, এখানে সাংবাদিক এসেছে। তাঁকে থাকতে দেওয়া যাবে না। এই বলে উক্ত ব্যক্তিগণ সহ আরো ৩০/৩৫ জন অজ্ঞাত লোক এসে তাঁর পরিহিত গেঞ্জি টেনে-হিচড়ে তাঁকে মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয় এবং তাঁর সাথে থাকা তাঁর ব্যবহৃত অপ্পো কোম্পানির স্মার্ট মোবাইলটি, ভিডিও ধারণের জন্য ক্যামেরা, নগদ টাকা, মানিব্যাগ সহ যাবতীয় ছিনিয়ে নেয়। এই সময় একজনের ছোঁরার আঘাতে তাঁর বাম হাতের মধ্যমা আঙ্গুল কেটে যায় যাতে তিনটি সেলাইয়ের প্রয়োজন পড়ে এবং বাম চোখ ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে এজাহারে বর্ণিত সাক্ষীদের এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় সেখান থেকে মহশীন প্রাণে বেঁচে এসে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়। চিকিৎসা শেষে রানীশংকৈল থানায় সাংবাদিক মহশীন তাঁর দাখিলকৃত এজাহার মূলে একটি মামলা দায়ের করেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত ব্যক্তিগণ এতটাই জঘন্য ও খারাপ প্রকৃতির লোক যে, ইতোপূর্বে তারা এক ব্যক্তিকে মার্ডার করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হইয়া জেল খেটেছিল। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ৫ বছর সাজা রেখে বাকি সাজা মওকুফ করে দেন। তারপর তারা সেই পাঁচ বছর কারাভোগ শেষ করে বের হয়ে এসে তারা যেখানে বসবাস করেন সেই জায়গাটা পরবর্তীতে মার্ডার বস্তি নামে পরিচিত পান। তাদের কারণে ওই এলাকায় সব সময় দাঙ্গা হাঙ্গামা, ঝগড়াঝাঁটি, মারামারি লেগেই থাকে। যার ফলে সেখানে পরবর্তীতে আরো মার্ডার পর্যন্ত হয়েছে।
ওই এলাকার নিরীহ আপামর জনসাধারণসহ জেলার সকল সাংবাদিক মহল সাংবাদিককে মারপিট, হত্যা চেষ্টা ও মালামাল লুটের জন্য যথাযথ আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিচার কাজে নিয়োজিত মহামান্য আদালতের নিকট সুবিচার দাবি করেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করার মাধ্যমে দ্রুত বিচার কাজে সহযোগিতা করে স্বাধীন ও ভয়-ডরহীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের প্রতি বিভিন্ন সাংবাদিক মহল থেকে আহ্বান জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আরশেদুল হক জানান, এজাহার পেয়ে তদন্ত করে মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য একজন দক্ষ অফিসারের দ্বারা মামলার আরো তদন্ত সহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।