বিনোদন প্রতিবেদক:রঙিন স্বপ্ন নিয়ে প্রবেশ করেন রূপালি জগতে। বুকে স্বপ্ন লালন করেন বড় শিল্পী হওয়ার। দিন কেটে যায় স্বপ্নে বিভোর হয়ে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় ভালো কাজের জন্য। কিন্তু কিছু মানুষ কাজ শুরু করার পরেই বিভিন্ন সংকটে থেমে যায় পথ। ফিরে যান শেকড়ে। ম্রিয়মান হয়ে যায় অভিনয় করার আকাক্সক্ষা ও আগ্রহ। যে কাজে লেগে থাকতে কিছু ফলাফল পাওয়া যায়, কিন্তু শুরুর আগেই শেষ হলে কীভাবে সফল হবেন? সফলতা তো দূরের কথা মানুষ তাকে ভুলে যাবে। শোবিজে আসা এমন অনেক তরুণ-তরুণী শূন্য হাতে ফিরে গেছেন। এমনই একজন পড়শী রুমী, সিলেটের মেয়ে অভিনয়ে বেশ পারদর্শী ছিলেন। একজন ভালো অভিনেত্রী হবার স্বপ্ন বুকে নিয়েই আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে মিডিয়াতে কাজ শুরু করেন।
অভিনয়ের দুনিয়ায় নিজেকে ঠিকঠাক মতো সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে তিনি এটিএন বাংলা আয়োজিত ‘নাট্যযুদ্ধ’ ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘লাক্স সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতাতেও অংশগ্রহণ করেন। দুটি রিয়েলিটি শো’তে বেশ ভালো অবস্থানেই ছিলেন তিনি। যে কারণে নির্মাতাদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হন তিনি। প্রথমেই তিনি মান্নান শফিকের পরিচালনায় ‘এক বিন্দু জল’ নাটকে অভিনয় করেন।
এরপর তিনি মুশফিুকর রহমান গুলঝারের ‘জোনাকী জ্বলে’, গাজী বদরুজ্জামানের ‘আÍসাৎ’ নাটক’সহ তপু খান, সাইদুর রহমান খোকন’সহ আরো বেশ কয়েকজন নাট্যনির্মাতার নির্দেশনায় নাটকে অভিনয় করে বেশ প্রশংসা কুঁড়িয়েছিলেন। এই প্রজন্মের শ্রোতাপ্রিয় ফোক শিল্পী কিশোর পলাশের ‘দেহ ডিঙ্গি’ গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছেন তিনি।
এই মিউজিক ভিডিওতে তার সহশিল্পী ছিলেন সাব্বির আহমেদ। এছাড়াও কাজী শুভ’র ‘ভুলে থাকো কেমন করে’ গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে কাজ করে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। এই দুটি মিউজিক ভিডিওই লাখ লাখ ভিউয়ার্স উপভোগ করেছেন। এছাড়াও মীর শহীদ’সহ আরো বেশ কয়েকজন শিল্পীর গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে কাজ করে তিনি বেশ সাড়া পেয়েছেন। কামরুজ্জামানের পরিচালনায় পড়শী রুমী প্রথম ‘গ্রামীণ ফোন’র বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি ‘ওয়েলফুড’, ‘বাহক’, ‘কনফিডেন্স সল্ট’, ‘প্রাণ আরএফএল জগ’, ‘ট্রিট চকোলেট’, ‘ফ্রেশ চিনি’সহ আরো বেশ কিছু পণ্যের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন।
পড়শী সিলেটের ‘দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়’ ও সিলেট মহিলা কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তার বাবা মো. মজিবুর রহমান। বাবা নেই তো পরিবারের সবার বড় সন্তান হিসেবে পরিবারের প্রতি তার রয়েছে অনেক দায়িত্ব। যে কারণে পরিবারের কথা চিন্তা করেই বেশ কিছুদিন যাবত মিডিয়াতে কাজ করা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন। কিন্তু পড়শী রুমীর প্রবল ইচ্ছে আবারো মিডিয়ার কাজে নিজেকে ব্যস্ত করে তোলা।
তিনি জানান এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছে। যারা নিয়মিত নাটক নির্মাণ করেন, মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেন। কিন্তু পড়শী রুমীর প্রবল ইচ্ছে ভালো কোনো কাজ দিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তন করা।
পড়শী রুমী বলেন, ‘শুধুমাত্র পরিবারের কথা ভেবেই আমি কিছুদিন মিডিয়াতে কাজ করা থেকে বিরত ছিলাম। কিন্তু কাজে না থেকে আর কতদিন। এখন চিন্তা করলাম যে আমাকে আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। যে কারণে আবার সবার সঙ্গে টুকটাক যোগাযোগ করছি। জানি সিলেটে থেকে মিডিয়ার কাজে নিয়মিত হওয়া সম্ভব নয়। যে কারণে শিগগিরই ঢাকায় চলে যাব। তার আগে একটি ভালো কাজের নিশ্চয়তা নিয়েই ঢাকায় গিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতে চাই। আমার বিশ্বাস আগে যারা আমাকে নিয়ে কাজ করেছেন তারা আবারো সহযোগিতার হাত নিয়ে পাশে থাকবেন। আমি কৃতজ্ঞ এর আগে আমাকে নিয়ে যারা কাজ করেছেন। নতুন করে জীবনটা শুরু করতে চাই। আমার বিশ্বাস আগের চেয়েও আমি ভালো করব।
এমন প্রত্যাশা শুধু তার নিজের নয়, দর্শকেরও প্রত্যাশা ছিল পড়শী একজন ভালো অভিনেত্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবেন। কিন্তু বিরতির কারণে অনেকটা ভুলতে বসেছেন দর্শক। আবার ফিরে এসে ভালো কাজ উপহার দেবেন বলে, আমাদের প্রত্যাশা।