নিজস্ব প্রতিবেদক:ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার ০২ নং ইউনিয়নের ভবানীপুর কুসুম উদ্দিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডকুমেন্ট আত্মসাৎ ও বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২ জুলাই) এমনটাই অভিযোগ তোলেন ওই স্কুলের দাতা সদস্য রমজান আলী। তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ০২ অক্টোবর আমার বাবা অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ কুশুম উদ্দিন ইন্তেকাল করেন। আমার বাবার মৃত্যুর পর, রেজুলেশনের মাধ্যমে আজীবন দাতা সদস্য হিসেবে আমাকে নির্বাচিত তৎকালীন করেন প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম। তৎকালীন ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ওহিদুল ইসলাম। প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ গেল ২০০৭ সালের ০১ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছায় ইস্তফা দাখিল করেন এবং একই তারিখে সহকারী শিক্ষক ওহিদুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। পরে ২০০৭ সালের ০২ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ রেজুলেশনের মাধ্যমে স্কুলের যাবতীয় আসবাবপত্র এবং সকল কাগজপত্র লিখিত ভাবে তাকে বুঝে দেন। সকল আসবাবপত্রের পাশাপাশি ও কাগজপত্রের সঙ্গে ছিলেন, উঁচু বেঞ্চ ৪৮টি, নিচু বেঞ্চ ৪৮টি, চেয়ার ৪টি, টেবিল ৪টি, হাজিরা রেজিস্টার ৬টি, রেজুলেশন বহি ২টি, অন্যান্য রেজিস্টার খাতা ৮টি ,ঘন্টা ১টি, তালা চাবি ৪ সেট, বুঝিয়ে নিয়ে অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করেন ওহিদুল ইসলাম।
দাতা সদস্য রমজান আলী আরও বলেন, ওহিদুল ইসলামকে ভবানীপুর কুসুম উদ্দিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়ে যান এ নিয়েই প্রশ্ন উঠে জনমনে এটা কি করে সম্ভব। তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ০১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে কিন্তু সে একই তারিখে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে জয়েনিং দেখান। এবং ০১/০১/২০০৮ ইং তারিখে তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে অত্র বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করান। আবার বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের শিক্ষক তথ্য বিবরণীতে ১৯৯৫ সালের ৩০ এপ্রিল অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের তারিখে দেখা গেছে ওহিদুল কে। এরই মধ্যে ১৪/০৩/২০১৮ ইং তারিখে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম। যোগদানের সময় প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলামকে কোন প্রকার আসবাবপত্র ও কাগজপত্র বুঝে দেননি ওহিদুল ইসলাম।
দাতা সদস্য রমজান আলী আরও বলেন, আমাকে দাতা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করার রেজিলেশন বহি, বিদ্যালয়ের সমস্ত কাগজপত্র আত্মসাৎ করেন তিনি। যেখানে প্রায় ১২ বছরের যাবতীয় হিসাব নিকাশ ছিল।
অপরদিকে তারিখ এবং সালের কোন প্রকার মিল পাওয়া যায়নি। চাকরি সূত্রে তারিখ ও সালের এমন গরমিল বিষয়টি ভাবার মত। এমন অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন ওই দাতা সদস্য রমজান আলী। এরপর তিনি ২০২৫ সালে প্রথম দিকে ওই বিদ্যালয় হতে বদলি নিয়ে প্রয়াগপুর সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
এ বিষয়ে গত ২২/০৯/২০২৪ ইং তারিখে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন রমজান আলী। অভিযোগের পর তাকে শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে বলেন নির্বাহী অফিসার। শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দাতা সদস্য ও রমজান আলী।