শহীদুল ইসলাম শহীদ।।উইন্ডমিল লিমিটেডের কর্ণধার সাব্বির রহমান তানিমকে ফ্যাসিজমের মিডিয়া ডন এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থের যোগানদাতা বলে দাবি করেছেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান। তানিমের গ্রেফতার দাবি করে আজ ১৮ জুলাই শুক্রবার দুপুরে, রাশেদ প্রধান তার সোশ্যাল মিডিয়ার ফেসবুক একাউন্টে এক বিস্তারিত প্রতিবেদন তুলে ধরেন। স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
১/
ইন্টারনেট বন্ধ করিনি, ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে। টাকা চুরি করিনি, টাকা পকেটে চলে এসেছে। প্রথম বাক্যটা সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের মুখে আমরা সবাই শুনেছি। দ্বিতীয় বাক্য যেটা আমরা কেউ শুনি নাই, আজ চলুন সেই গল্পটা শুনি।
জুনায়েদ আহমেদ পলকের পকেট এজেন্সির নাম উইন্ডমিল। আর এই উইন্ডমিলের কর্ণধার সাব্বির রহমান তানিম। তানিমের কাজ ছিল ২ টি।
ক) অপ্রয়োজনীয় এবং আজগুবি কাজের মাধ্যমে সরকারী অর্থাৎ জনগণের ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ এবং জুনায়েদ আহমেদ পলককে তার কমিশন বুঝিয়ে দেওয়া।
খ) দেশের মানুষের মাথায় টুপি পরানো, চোখে ধুলা দিয়ে আজগুবি আওয়ামী উন্নয়নের গল্প দিয়ে মানুষকে ব্যস্ত রাখা।
আওয়ামী ইভেন্ট মাফিয়া অথবা মিডিয়া ডনদের মাঝে সেরা গাউসুল আলম শাওনের পরেই থাকবে সাব্বির রহমান তানিমের নাম। নিম্নরুচির ঠিকাদারি ও চাঁদাবাজি মস্তিষ্ক ব্যবহার করে সাব্বির রহমান তানিম, শেখ হাসিনার ফ্যসিজমকে বৈধতা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত ছিল। এই কারনে হাসিনাপুত্র জয়ের আশীর্বাদের হাতও ছিল তানিমের মাথার উপরে, সাথে দেদারসে অর্থ উপার্জনতো আছেই।
২/
আধা সের পানিতে তিন আঙ্গুলের এক চিমঠি লবণ আর এক মুঠ গুড়, “হয়ে গেলো স্যালাইন”। নতুন একটি নামকরণে নতুন একটি আয়োজন আর শেখ পরিবারের গুণগান, “হয়ে গেলো অনুমোদন”। প্রজেক্ট প্রপোজাল রেডি হলেই ভোঁ দৌর জুনায়েদ আহমেদ পলকের আইসিটি মন্ত্রণালয়ে। লোক দেখানো প্রতিযোগিতাহীন টেন্ডারে বিশাল ইভেন্টের উপার্জন। আওয়ামী দুঃশাসন থেকে জনগণের দৃষ্টিকে দূরে রাখার চমৎকার প্রক্রিয়া।
ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসঃ আইসিটি ডিভিশনের উদ্যোগে সিআরআই ও এটুআই এর তত্ত্বাবধানে বিগত সরকারের আমলে ১২ ডিসেম্বর করে পালিত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস। ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পালন এবং ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে অর্থ অপচয় এবং লুটপাট হয়েছে দেদারসে।
শেখ রাসেল দিবসঃ ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের জন্মদিন। ক শ্রেণিভুক্ত রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেখ রাসেল দিবস পালন করতে হবে। কেন করতে হবে তার কোন ব্যাখ্যা আমার কাছে নাই, তাই আর কিছু লিখতে পারছি না। তবে আয়োজকসাব্বির রহমান তানিম জানলেও জানতে পারেন।
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলঃ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে ২০১৮ সালে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংস্থার অধীনে উদ্বোধন করা হয় ‘ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিল’। এতে স্থান পাওয়ার কথা ছিল সাংবাদিকতা, সঙ্গীত, অভিনয়, নৃত্য, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যানিমেশন। উদ্বোধন হল, ফান্ড আসলো – ফান্ড গেলো, বাকি যে কি হলো জানা গেলো না। উদ্বোধক দরবেশ বাবা সালমান এফ রহমান এবং জুনায়েদ আহমেদ পলক, আয়োজক সাব্বির রহমান তানিম। শুধু আয়োজক নয়, এই কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের নামও সাব্বির রহমান তানিম। কাউন্সিলের সভাপতি আরেক কুখ্যাত নাম ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শমী কায়সার। শমী কায়সার সেদিন নেটফ্লিক্সের বিকল্প প্ল্যাটফর্মের সূচনা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সম্ভবত সাব্বির রহমান তানিমের মালিকানাধীন “থার্ড বেল” নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখেছিলেন।
বাংলাদেশ স্টার্ট আপ সামিটঃ উদ্যোক্তা তৈরিতে দেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নাই জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দায়িত্ব নিলেন জুনায়েদ আহমেদ পলক। বাৎসরিক বাজেট ১০০ কোটি টাকা মাত্র। আয়োজক সাব্বির রহমান তানিম।
বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ড, বঙ্গবন্ধু ন্যাশনাল স্কিলস কম্পিটিশন, জাতীয় যুব দিবস, স্টার্ট আপ কম্পিটিশন, আইডিয়াথন, ডিজিটাল ডিভাইস এন্ড ইনোভেশন এক্সপো, বেসিস সফট এক্সপো, ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলোজি, বিপিও সামিট, এটুআই এর প্রচারণার ভিডিও নির্মাণ, ইনোভেশন ডিজাইন এন্ড অন্ট্রাপ্রেনারশিপ একাডেমী (আইডিএ) প্রচারণার মত বড় এবং বিগ বাজেটের কাজ তানিম করেছেন লোক দেখানো প্রতিযোগিতাহীন টেন্ডারে পলকের আশীর্বাদে।
কোভিড-১৯ পরবর্তী আইসিটি রোডম্যাপ “ওভারকামিং দ্যা চ্যালেঞ্জেস এন্ড লেভারেজিং নিউ অপরচুনিটিস ফর আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি” প্রজেক্টের কো অর্ডিনেটর ছিলেন সাব্বির রহমান তানিম।
৩/
গত ২৭ জুন জাতীয় দৈনিক আমার দেশ অনুসন্ধানী রিপোর্ট এ জানিয়েছে, আওয়ামী আমলে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট খাত থেকে লুটে নেওয়া হয়েছে হাজার কোটি টাকা। সেই অনুসন্ধানী রিপোর্ট এ উঠে এসেছে সাব্বির রহমান তানিম এবং তার মালিকানাধীন কোম্পানি উইন্ডমিল-এর কথা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক আইসিটি বিভাগের প্রকাশিত শ্বেতপত্রে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে তার মধ্যে ১৫৭ কোটি টাকা দূর্নীতি করে ১২ নম্বরে আছে পলকের পকেট এজেন্সি ইভেন্ট মাফিয়া সাব্বির রহমান তানিম এবং তার কোম্পানি উইন্ডমিল এডভার্টাইজিং লিঃ।
৪/
শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্র এবং ফ্যাসিজমকে জায়েজ করা, সরকারী কাজের নামে আওয়ামী প্রচারণা পরিচালনা করে জনগণের ভ্যাট ট্যাক্সের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা, আওয়ামী অপরাধ ঢাকার জন্য বাংলাদেশের মিডিয়া জগতকে নিয়ন্ত্রণ করার অপরাধে ফ্যাসিজমের মিডিয়া ডন সাব্বির রহমান তানিম কবে বিচারের আওতায় আসবে?
কে বা কারা হাসিনামুক্ত নতুন বাংলাদেশে সাব্বির রহমান তানিমকে রক্ষা করছে?
কবে তানিমকে প্রশাসন প্রশ্ন করবে,
জনগণের কত টাকা আত্মসাৎ করেছে?
আত্মসাতের অর্থ দেশে নাকি বিদেশে পাচার হয়েছে?
পলকের টাকার ভাগ সম্পূর্ণ প্রদান নাকি তার কাছে রক্ষিত আছে?