1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
রায়পুরার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের আতঙ্ক “এরশাদ মেম্বার” — একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত এই নামধারী বিএনপি নেতা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াঙ্গীতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আমীনের উপর হামলার প্রধান দস্যুতার অপরাধে গ্রেফতার বিআরপি’র বহিস্কৃত নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ বিআরপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল শালবাহান তেলের খনি পুনরায় চালুর দাবিতে তেঁতুলিয়ায় মানববন্ধন পীরগঞ্জ বাসী কল্যাণ সমিতি ঢাকা এর হুইল চেয়ার বিতরণ বিলুপ্তির পথে হারিকেন প্যারোলে মুক্তি নিয়ে মায়ের জানাজায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খোকন জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত-৪ খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে খাদ্য কর্মকর্তা লাপাত্তা

খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে খাদ্য কর্মকর্তা লাপাত্তা

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ফজলার রহমান(গাইবান্ধা)থেকে ঃগাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানাগেছে, যথাযথ নিয়ম-নীতি অনুসরণ না করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মমিনুর রশিদ সিদ্দিকী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীদেরকে গোপনে নিয়োগ দিয়েছেন । এমনকি একাধিক ফেসিষ্টের দোসরকেও ভিন্ন নামে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকেই তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করে গা ঢাকা দিয়েছেন।বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমাজ ও সচেতন মহল।

 

সূত্র জানায়, ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ২১ জন ডিলার নিয়োগের জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ১২টি শর্তারোপ করে আবেদনপত্র জমাদানের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৮৮টি আবেদনপত্র জমা পড়ে।

বিজ্ঞপ্তির ২ নম্বর শর্তে উল্লেখ করা হয়—প্রত্যেক আবেদনকারীর কমপক্ষে ১৫ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংরক্ষণের সক্ষমতা ও একটি পাকা গুদামঘর থাকতে হবে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ আবেদনকারীর গুদামঘর এই শর্ত পূরণে অক্ষম ছিল।

নিয়ম অনুযায়ী, যেসব বিক্রয় কেন্দ্রে একাধিক আবেদন পড়ে, সেখানে লটারির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করার কথা থাকলেও তা অনুসরণ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মমিনুর রশিদ সিদ্দিকী রাতের আঁধারে তালিকা চূড়ান্ত করে ৯ জুলাই তাতে স্বাক্ষর করেন এবং ১৩ জুলাই তা প্রকাশ করেন।

চাঞ্চল্যকর তথ্য হচ্ছে—এই তালিকা কমিটির সভাপতি ও একাধিক সদস্যকে না জানিয়েই অনুমোদন করা হয়েছে। ফলে এতে ভিন্ন নামে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন একাধিক ফেসিষ্টের দোসর ও প্রভাবশালী মহলের আত্মীয়স্বজন, এমনকি ব্যবসায়ী নন এমন ব্যক্তিরাও। এতে করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

১৩ জুলাই তালিকা প্রকাশের পর বঞ্চিত আবেদনকারীরা উপজেলা খাদ্য অফিস ঘেরাও করে লটারির দাবিতে প্রতিবাদ জানান। ওইদিন সন্ধ্যায় খাদ্য কর্মকর্তা ১৪ জুলাই সকাল ১১টায় লটারি আয়োজনের একটি নোটিশ তৈরি করলেও, অজ্ঞাত কারণে তা স্বাক্ষর না করেই গা ঢাকা দেন।

অভিযোগ রয়েছে, একটি “অজ্ঞাত ফোন কল” ও স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর মধ্যস্থতায় আরও ৮ জনকে অন্তর্ভুক্ত করার শর্তে আপসের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকেই মমিনুর রশিদ সিদ্দিকী কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে নিয়োগ বঞ্চিত অন্তত ১৫-১৬ জন আবেদনকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তাঁরা লটারির মাধ্যমে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পুনরায় নিয়োগ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন—অন্যথায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম জানান, “মোট ৮৮টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ২২টি বৈধ বিবেচনায় নেয়া হয়। শুনেছি ২১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে মোট ২৯টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।”তার এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন, তবে প্রক্রিয়াটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

খাদ্য কর্মকর্তা মমিনুর রশিদ সিদ্দিকী বলেন, “প্রথম পর্যায়ে ২১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সমঝোতার ভিত্তিতে আরও ৮ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে, যা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।”

নিয়োগ কমিটির সদস্য ও সমাজসেবা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, “প্রকৃতপক্ষে এসব সিদ্ধান্ত সভাপতি ও সদস্য সচিবরাই নিয়ে থাকেন। অন্যান্য সদস্যদের মতামতের তেমন গুরুত্ব নেই।”

প্রেসক্লাব সভাপতি ও কমিটির আরেক সদস্য শাহ আলম সরকার বলেন, “আমাকে কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে তা জানানো হয়নি। পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কেও আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।”

পলাশবাড়ী উপজেলা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম লিয়াকত বলেন, “খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনসংশ্লিষ্ট উদ্যোগ। এখানে অনিয়ম বা গোপনীয়তা বরদাশত যোগ্য নয়। জনস্বার্থে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে লটারির মাধ্যমে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে জনস্বার্থে ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে পলাশবাড়ী উপজেলা নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব ও সাংবাদিক মোঃ ফেরদাউছ মিয়া খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন।

 

স্থানীয় সচেতন মহল ডিলার নিয়োগের এ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং লটারির মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় জনমনে অসন্তোষ আরও ঘনীভূত হবে বলেও সতর্ক করেছেন তাঁরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং