চৌধুরী নুপুর নাহার তাজ, নিজস্ব প্রতিনিধি।।দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় উঠে এসেছে এক অবিবাহিত তরুণীর নাম। চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, সংশ্লিষ্ট তরুণী নিজেই জানেন না তাঁর নামে কোনো ভাতা চালু রয়েছে। অথচ সেই ভাতার টাকা নিয়মিত উত্তোলন করা হচ্ছিল স্থানীয় এক নারী ইউপি সদস্যার জামাইয়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে।
জানা গেছে, উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোছা. নুরনাহার বেগমের সুপারিশে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে এই ভাতা চালু করা হয়। ভাতার আবেদনপত্রে একজন অবিবাহিত তরুণীকে গর্ভবতী এবং বিবাহিতা দেখানো হয়। ব্যবহার করা হয় ভুয়া গর্ভাবস্থার সনদ ও মনগড়া স্বামীর নাম। এই তথ্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের সাম্প্রতিক যাচাই-বাছাইয়ে ধরা পড়ে।
ভুক্তভোগী তরুণী আক্তারিনা আক্তার, আংগারপাড়া ইউনিয়নের তালেব মেম্বারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাবা-মা হারা এবং এক প্রতিবন্ধী ভাইয়ের দেখভাল করে থাকেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সরকারি ‘ভি.ডব্লিউ.বি’ কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল পেতে আবেদন করতে গিয়ে জানতে পারেন—তাঁর নামে আগে থেকেই মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে তাঁর নামে ভাতার আবেদন করা হয়। আবেদনপত্রে স্বামীর নাম লেখা হয় "পায়েল" এবং একটি গর্ভাবস্থার সনদপত্র সংযুক্ত করা হয়। অথচ বাস্তবে আক্তারিনা অবিবাহিত, তাঁর কোনো বৈবাহিক সম্পর্ক বা সন্তান ধারণের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ভাতার টাকা উত্তোলনের জন্য যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিও তাঁর নয়। উক্ত নম্বরে যোগাযোগ করলে জানা যায়, নম্বরটি ইউপি সদস্যা মোছা. নুরনাহার বেগমের জামাইয়ের। তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রীর নামই আক্তারিনা। কিন্তু যাচাই করে দেখা যায়, তাঁর স্ত্রীর প্রকৃত নাম সুরাইয়া আক্তার, যা স্পষ্টভাবে প্রতারণার ইঙ্গিত দেয়।
ভুক্তভোগী আক্তারিনা বলেন,
“আমি অবিবাহিত। মাতৃত্বকালীন ভাতা সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমার নাম ব্যবহার করে যারা এ কাজ করেছে, তারা যেন কঠোর শাস্তি পায়।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যা মোছা. নুরনাহার বেগম মুঠোফোনে বলেন, “ভুল হয়ে গেছে। আমার মেয়ের বয়স কম এবং সে অসহায়। তাই অন্যের এনআইডি ব্যবহার করে মাতৃত্ব কার্ড করেছি।”
এ প্রসঙ্গে খানসামা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা মোস্তারি বলেন, “বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। অবিবাহিত মেয়েটির নামে চালু হওয়া ভাতা বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে। প্রমাণ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, “একজন দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন অনিয়ম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রকাশক/সম্পাদক :- শাওন আমিন।। ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক :- মোঃ গিয়াস উদ্দিন।। নির্বাহী সম্পাদক :- ঝড় আমীন।। প্রধান কার্যালয় :- হালিশহর, চট্রগ্রাম। মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২০৬১১৬৩ ঢাকা কার্যালয়:-বাসা নং ৫১/৩,ধানমন্ডি ৩/এ, ঢাকা।-১২০৯ মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২৪১৫৮৫৩,+৮৮০১৫৮০৮২০৬৬৩,+৮৮০১৭১২০৬১১৬৩
E-mail :- newszhor@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত. বাংলাদেশ হোস্টিং