নিজস্ব প্রতিবেদক।। কক্সবাজার সদরে উপজেলায় হঠাৎ বেড়ে গেছে গরু ছাগল চোরের উপদ্রব। বিগত মাস দুয়েকের মধ্যে সদরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ধশতাধিক গরু ছাগল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। হঠাৎ করে পশু চুরির হিড়িক পড়ায় উদ্বিগ্ন খামারিরা।এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে এ চুরির ঘটনায় থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।
জানা গেছে, পিএমখালী ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকার আব্দুর রশিদের একটি, নুরুল আলমের একটি, ইউসুফের ৫টি, মৌলভী ফেরদৌসের একটি, আবু তাহেরের একটি, আবুল কালামের একটি, এম এ সাত্তারের ২টি, বেলারুশ আলমের একটি সহ অসংখ্য মানুষের ছাগল চুরির হয়েছে।
ভুক্তভোগী এম এ সাত্তার বলেন, ডিসেম্বরের ২২তারিখ বিকালে বাড়ির আশপাশ থেকে আমার মা ছাগলটি কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। মা ছাগলটি চুরি হলে ২৮/৩০ দিন বয়সী বাচ্চা দুটির মা ডাকাডাকি শুনলে নিজেকে খুবই অসহায় লাগছে। আমার মা-ছাগলটি সন্তানের মতো ছিলো। ‘সোনালী’ বলে ডাক দেওয়ার সাথে সাথেই সামনে এসে যেতো।নাস্তা না দেয়া পর্যন্ত সঙ্গ ত্যাগ করতো না উক্ত শখের বশে পালিত ছাগল টি। আবার মা-ছাগলটি চুরির ২/৩ সপ্তাহ আগেও একটি খাসি ছাগল চুরি হয়ে যায় ।সম্ভব্য অনেক স্থানে খুজাখুঁজির করে পাওয়া যায়নি এ খাসি ছাগলটি।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র সিএনজি/ অটো নিয়ে মানুষের দৃষ্টির আড়ালে গরীব, অসহায় মানুষের গরু ছাগল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এই পর্যন্ত অসংখ্য গৃহপালিত পশু চুরির ঘটনা ঘটলেও চক্রের কোন সদস্যকে সনাক্ত করা যায়নি।যে কারণে চোর চক্রটি দিনদিনই সক্রিয় হয়ে উঠে। প্রতিদিন কারো না কারো গরু ছাগল নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। এতে গৃহপালিত পশু পালনকারী মানুষ ভীষণ উদ্বিগ্নের মধ্যে দিন যাপন করছে।
মোঃ ইউসুফ নামের এক ব্যক্তি বলেন, পারিবারিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে ছাগল পালন করে আসছি। হঠাৎ করে দিনে দুপুরে আমার তিনটি ছাগল চুরি হয়ে যায়।এর আগে গত বছরের শেষ দিকে সপ্তাহ ব্যবধানে ২টি ছাগল নিখোঁজ হয়ে গেছে। খোঁজাখুঁজি করে কোথাও ছাগলের সন্ধান পাইনি। ছাগলগুলো চুরি হওয়ায় আমার প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।চোর চক্রের সাথে স্থানীয় একটি গ্রুপ জড়িত আছে।
খুরুশকুল তেতৈয়ার জিয়া উদ্দিন এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে বলেন, অটোতে করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র গরু ছাগল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগেও আমার প্রতিবেশীর ৫টি গরু, দুটি ছাগল চুরি হয়েছে।
অল্প হয় কয়েক দিনের মধ্যে গরু চুরি হয়েছে মৃত বদিউল আলমের ছেলে মোঃ সোহেলের ১টি, মৃত বযরুজ মেহেরের ছেলে গোলাম হোসেনের ১টি, মৃত বদিউর রহমানের ছেলে আবুল কাশেমের ১টি, মৃত সিকান্দার আলীর পুত্র মনছুর আলমের ১টি।এ রকম অভাবের সময়ে চুরি দুঃখজনক।এ চুরির ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করা উচিত বলে জানান তিনি।
খামারি জয়নুল আবেদীন বলেন, হঠাৎ গৃহপালিত পশু চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের।পশু পালনকারীদের বেশির ভাগই গরিব। তারা অনেক আশা নিয়ে পশু গুলো লালন পালন করে থাকেন।পুলিশ প্রশাসন যদি এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ না নেয় তাহলে সম্প্রতি বৃদ্ধি পাওয়া চুরি- ছিনতাই থামবে না।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, গরু ছাগল চুরির সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন।