শহীদুল ইসলাম শহীদ,পঞ্চগড় ।।পঞ্চগড়ে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিনের মৃত্যুর প্রায় দুই বছর পর আদালতে হত্যা মামলা করেছেন তার স্ত্রী শিরিন আক্তার। মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী, পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য, সাবেক জেলা প্রশাসক, সাবেক পুলিশ সুপারসহ ১৫৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৭০০-৮০০ জনকে আসামী করা হয়।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলার আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক এসএম শফিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজহারভূক্ত করতে সদর থানা পুলিশকে আদেশ দেন। তবে মঙ্গলবার বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা জজ আদালতের পিপি আদম সুফি।
চাঞ্চল্যকর এই মামলায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা, সাবেক রেলমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম সুজন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সাবেক দুই সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান ও নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকিয়া খাতুন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আল তারিকসহ ১৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে আসামী করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের নেতৃত্বে তৎকালীন জেলা প্রশাসক, পুলিশের চার কর্মকর্তার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও ইন্ধনে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় সময় বিএনপি নেতা আরেফিনের উপর হামলা ও তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে দলের অন্য নেতাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছিল আরেফিনের পরিবার। মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহত বিএনপি নেতা আরেফিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল ওহাব আনসারী বলেন, তৎকালীন পতিত স্বৈরাচারী সরকারের ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের আশঙ্কায় বাদী এতদিন মামলা করতে পারেননি। আমরা আশা করি, দ্রুত আসামীরা গ্রেপ্তার হবেন এবং বিচারের মাধ্যেমে ন্যায় বিচার পাবো।
পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের পিপি আদম সুফি বলেন, তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুকূল পরিবেশ না থাকায় বাদী এখন তার স্বামীর হত্যা মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত পূর্বক এজাহার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন।।