ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা:ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া খাদ্য গুদামে শটার না করে প্রায় এক হাজার বস্তা পুরাতন ও নিম্নমানের চাল ঢোকানোর ঘটনায় ঘুষ ও অনিয়মের একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন খাদ্য গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক।
স্থানীয় একটি হাসকিং মিলের মালিক আবু সাঈদ জানান, ২৭ মে (মঙ্গলবার) গুদামে শটার ছাড়া ৪০০ বস্তা পুরাতন ও ৩০০ বস্তু শটার করা চাল ঢোকাতে গিয়ে তিনি খাদ্য পরিদর্শক শিপ্রা শীলকে কেজি প্রতি ঘুষ দিয়েছেন—পুরাতন চালের জন্য ১ টাকা ৫০ পয়সা এবং নতুন চালের জন্য ৫০ পয়সা।
তিনি বলেন, “আপনাদের (সাংবাদিকদের) কারণে খাদ্য পরিদর্শক শিপ্রা শীল এখন চালের বিল আটকে দিয়েছেন। উনি বলছেন, চাল ফেরত নিয়ে যেতে হবে।”
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সংবাদকর্মীদের ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেন পরিদর্শক শিপ্রা শীল। তবে সংবাদকর্মীরা ঘুষের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
পরে তড়িঘড়ি করে গুদাম থেকে পুরাতন চাল সরিয়ে নিতে একাধিক ট্রলি আনা হয়। গুদাম থেকে চালের বস্তা ট্রলিতে তোলার চিত্র ধারণ করতে গেলে স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার শিক্ষানবিশ সংবাদকর্মী আতিকুর রহমান আতিক ও রুহুল আমিনের ওপর হামলার চেষ্টা হয়, এবং তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টাও করা হয়।
সচেতন মহল মনে করেন, “সরকারি গুদামে এ ধরনের অনিয়ম খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত নিরাপত্তাও এখন প্রশ্নের মুখে।” তিনি ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, রুহিয়া গুদামে চাল মজুদের ঘটনায় ঘুষ, অনিয়ম, সংবাদকর্মীদের হেনস্তা ও সরকারি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ—এই অভিযোগগুলো গণতান্ত্রিক প্রশাসনিক কাঠামোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। বিষয়টির স্বচ্ছ তদন্ত না হলে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।
এই বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত খাদ্য পরিদর্শক শিপ্রা শীল কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাছান বলেন, অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।