1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১১:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
নূরুল ইসলাম দেওয়ান – সঙ্গীতভক্তি, সততা আর সংগ্রামের প্রতীক গাইবান্ধায় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল যুবকের আটোয়ারীতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশন, স্বামী লাপাত্তা  আবারো অশান্ত মাধবদীর নাগরারহাট: সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগ আহত ৩ পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান হিন্দুস্তানের পানি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে- রাশেদ প্রধান ঐতিহ্য, অগ্রগতি ও অর্জনের প্রতিচ্ছবি: তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে উপসহকারী প্রকৌশলী নিজেই ঠিকাদারের ভুমিকায় নরসিংদীতে সংবাদ সম্মেলন করে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা সমিতির কমিটি ঘোষণা অপহরণের পর হত্যার হুমকি, নিরাপত্তা চেয়ে সুবর্ণা হত্যাকারীদের বিচারের দাবী দিনাজপুরের খানসামায় পানিতে ডুবে দুই বছরের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু

আবারো অশান্ত মাধবদীর নাগরারহাট: সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগ আহত ৩ পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ক্রাইম রিপোর্টার ।। নরসিংদীর মাধবদীর চরদাউদপুর (নাগরারহাট) এলাকায় আবারও রক্তাক্ত সন্ত্রাসের চিত্র। পূর্ব বিরোধের জেরে এলাকার পরিচিত ব্যবসায়ী মোঃ মামুন এবং তার পরিবার সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছেন। হামলাকারীরা শুধু ব্যক্তি আক্রমণেই থেমে থাকেনি—লুট করেছে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ, পুড়িয়েছে ঘরবাড়ি, চালিয়েছে ব্যাপক ভাঙচুর। আহতদের মধ্যে একজন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন, বাকিরাও গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ভয়াবহ হামলার বিবরণ:

২ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে মামুনের মালিকানাধীন “এম এম মুন” কার ওয়াশ প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালায় স্থানীয় সন্ত্রাসী চক্র। অভিযোগ অনুযায়ী, মোঃ ইমতিয়াজ আহমদ মামুন (৩০) সহ মোট ১৬ জন নামধারী ও ৪/৫ জন অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারী দেশীয় অস্ত্র, চাপাতি, রামদা, পিস্তল নিয়ে প্রবেশ করে। তারা প্রতিষ্ঠানটির দুটি পালসার মোটরসাইকেল, কম্প্রেশার, কার ওয়াশ মেশিনসহ প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মালামাল ভাঙচুর করে।

হামলার সময় কর্মচারী মোঃ সুলতান মিয়া (৫৫) বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে গুরুতর জখম করে। সুলতানের চিৎকারে এগিয়ে আসেন মামুনের পিতা মোঃ মিজানুর রহমান মিরজু (৬৫) এবং ভগ্নিপতি মোঃ লতিফ মিয়া (৩৮)। মিজানুর রহমানের ডান হাতের আঙুল কেটে যায়। লতিফ মিয়াকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির ভিতর নিয়ে গিয়ে পিঠে ও পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়—পিঠে ২৮টি এবং পায়ে ৮টি সেলাই লেগেছে।

বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ:

এরপর হামলাকারীরা ব্যবসায়ী মামুনের বসতবাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। ঘরের ৭/৮টি কক্ষ ভাঙচুর করে, আসবাবপত্র তছনছ করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। তারা স্টিলের আলমারি ভেঙে নিয়ে যায় ৪.৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার (মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা) ও জমি কেনার জন্য রাখা ১৭ লক্ষ টাকা নগদ অর্থ।

এ সময় এলাকাবাসীর চিৎকারে লোকজন জড়ো হলে সন্ত্রাসীরা পিস্তল দিয়ে গুলি চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

আহতদের অবস্থা:

আহত সুলতান মিয়াকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে (NITOR) স্থানান্তর করা হয়েছে। অপর আহত মিজানুর রহমান ও লতিফ মিয়া বর্তমানে নরসিংদী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হামলার পেছনে রাজনৈতিক ও মাদক সংযোগ:

ভুক্তভোগী মামুন জানান, তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি। তার দাবি, মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে। অভিযুক্তরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকা সন্ত্রাসী চক্র এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

মিজানুর রহমান, মামুনের পিতা ও বিএনপি মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, বলেন, “আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আমি ও আমার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন জানাই।”

সংবাদ সম্মেলন ও প্রশাসনিক অবস্থান:

৫ জুলাই ভুক্তভোগীরা নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে তারা ঘরের ভাঙচুর দৃশ্য, অস্ত্র, ককটেল ও পেট্রোল বোমা প্রদর্শন করেন এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন।

মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মনির বলেন, “এই সন্ত্রাসীরা কারও রাজনৈতিক পরিচয়ে ছাড় পাবে না। মেহেরপাড়ায় সন্ত্রাসের স্থান নেই।”

মাধবদী থানা পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়দের আতঙ্ক ও দাবি:

নাগরারহাট এলাকার সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এলাকাটি এখন পুরোপুরি উত্তপ্ত। স্থানীয়দের দাবি, এই দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, নয়তো আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের প্রতি এলাকাবাসীর অনুরোধ – নাগরারহাটে শান্তি ফেরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং