1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
পলাশবাড়ীতে গৃহবধূ সম্পা হত্যার প্রতিবাদ ‘অবিবাহিত’ আক্তারিনা ভাতার খাতায় ‘মা’! টাকা যায় ইউপি সদস্যার জামাইয়ের মোবাইল নম্বরে ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ইট-বালু ঘরে পড়ার প্রতিবাদ করায় মারধর, ঠিকাদার গ্রেপ্তার রায়পুরার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের আতঙ্ক “এরশাদ মেম্বার” — একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত এই নামধারী বিএনপি নেতা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াঙ্গীতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আমীনের উপর হামলার প্রধান দস্যুতার অপরাধে গ্রেফতার বিআরপি’র বহিস্কৃত নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ বিআরপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল শালবাহান তেলের খনি পুনরায় চালুর দাবিতে তেঁতুলিয়ায় মানববন্ধন পীরগঞ্জ বাসী কল্যাণ সমিতি ঢাকা এর হুইল চেয়ার বিতরণ বিলুপ্তির পথে হারিকেন

ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ইট-বালু ঘরে পড়ার প্রতিবাদ করায় মারধর, ঠিকাদার গ্রেপ্তার

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ইট-সিমেন্ট ও বালু পড়ছিল প্রতিবেশি সারওয়ার জাহানের ঘরের চালের উপর। এনিয়ে বহুতল ভবনের মালিক ঠিকাদার আব্দুল আওয়ালকে বলতে গেলে উল্টো সারওয়ার জাহান ও তার স্ত্রীকে কাঠ দিয়ে বেধড়ক পেটান আব্দুল আওয়াল তার স্ত্রী ও ছেলে প্রিন্স।
এ ঘটনায় শুক্রবার (৪ জুলাই) সারওয়ার জাহানের স্ত্রী নাইমা নুসরাত তনু বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তবে ঠিকাদার আব্দুল আওয়াল প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ উল্টো অভিযোগকারীর স্বামী সারওয়ার জাহানকেই আটক করেন। যদিও পরে তাকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ বাধ্য হয়ে শনিবার (১৯ জুলাই) ভোর রাতে আব্দুল আওয়ালকে গ্রেপ্তার করেন।
মামলার বাদী নাইমা নুসরাত তনু ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মুসলিমনগর এলাকার সারওয়ার জাহানের স্ত্রী। তার স্বামী সারওয়ার জাহান পঞ্চগড়ের আটোয়ারী মির্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিষয়ে প্রভাষক।
আর অভিযুক্তরা হলো-একই এলাকার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে আব্দুল আওয়াল (৫২) তার স্ত্রী হাসনাহেনা কলি (৪৫) ও ছেলে মো: প্রিন্স (২৫)। জানা গেছে আব্দুল আওয়াল পৌর বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন।
এঘটনায় সদর থানায় উভয়পক্ষেই তিনটি মামলা করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার আব্দুল আওয়াল সারওয়ার জাহানের বাড়ির পাশের চারতলা ভবন নির্মাণের কাজ করে আসছেন। নির্মানকৃত ভবনের কাজে কোন প্রকার নেট বা অন্য কোন সাপোর্ট না দিয়ে ভবনের সিমেন্ট বালু, ইটের টুকরা টিনসেট বাড়ির টিনের উপর পড়তে থাকে। একপর্যায়ে সারওয়ার জাহান ও তার স্ত্রী নাইমা নুসরাত তনু ভবনের মালিক ঠিকাদার আব্দুল আওয়ালকে বিষয়টি বললে তিনি কর্ণপাত না করে নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
পরবর্তীতে সারওয়ার জাহান তাদের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় মৌখিক ভাবে অভিযোগ করিলে আব্দুল আওয়ালের পরিবার ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে আবারও আব্দুল আওয়ালকে বলতে গেলে তার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি, অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে কলেজ শিক্ষক সারওয়ার জাহানকে এলোপাথারী ভাবে মারপিট করে। এসময় স্বামীর চিৎকারে স্ত্রী তনু এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করে আব্দুল আওয়াল তার স্ত্রী-ছেলে। মারধরের একপর্যায়ে আব্দুল আওয়াল তনুর গলা থেকে স্বর্ণের চেনই ছিনিয়ে নেয় এবং তার ছেলে প্রিন্সের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তনুর মাথায় জোড়ে আঘাত করলে তনুর মাথা ফেটে যায়। পরে স্থানীয়রা নাইমা নুসরাত তনু ও তার স্বামী সারওয়ার জাহানকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
কয়েকজন প্রতিবেশীরা জানান, ঠিকাদার আব্দুল আওয়াল ও তার স্ত্রী-ছেলে যেটা করছে মোটেও ঠিক করেনি। প্রতিনিয়তই তারা কলেজ শিক্ষক সারওয়ারের বাড়ি বালু-ইট ও সিমেন্ট ফেলে। এতে তাদের ঘরে টিনের চালা নস্ট হয়ে যায়। সারওয়ার ঠিকাদার আওয়ালকে বলেছে যেহেতু আপনি বাড়ির কাজ করছেন একটা নেট দিলে আমার বাড়িতে বালু ও ইটের খোয়া আর পড়তো না। এটা বলাই কি অপরাধ ছিল? এভাবে কেউ কাকে মারে? সে বিএনপি করে বলে কি যা মন তাই করবে?
একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এসব করছেন। ইচ্ছা করলেই তিনি একটা নেট এর ব্যবস্থা করতে পারতেন। ঠিকাদারি টাকা-পয়সা আছে বলে প্রভাব দেখিয়েছেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী নাইমা নুসরাত তনু বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে আব্দুল আওয়ালের নির্মাণাধীন ভবনের ইট, খোয়া বালু আমাদের ঘরের উপরে পড়ছিল। আমার স্বামী তাকে বলতে গেলে সে কিছুই কথা শুনছিলেন না। আমাদের ছোট বাচ্চা আছে তার মাথাতেও কয়েকবার পড়েছে। পরে পৌরসভাতেও অভিযোগ করা হয়। তারপরেও জাল বা নেট লাগাচ্ছিলেন না। আবারো বলতে গেলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে সাটারিং এর বাশ-কাঠ ও রড দিয়ে আমার স্বামীকে মারধর করে। আমি তাকে রক্ষা করতে গেলে আমাকেও মারধর করে।
তার স্বামী সারওয়ার জাহান বলেন, আমাকে বেধরক মারধরের দৃশ্য দেখে আমার ছোট বাচ্চাটি আতঙ্কে আছে। এর চাইতে দুঃখ আর কি হতে পারে। প্রতিনিয়তই তাদের ভবনের বালু’ ইটের খোয়া আমার বাড়িতে পড়ে। ছোট বাচ্চাটি আঙিনায় খেলা করে। একপাশে নেট দিতে বলেছিলাম যাতে খোয়া না পড়ে। এতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর হামলা করে।
তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো আমরা স্বামী-স্ত্রী হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলাম। আবার পুলিশ আমাদেরকেই শাসাচ্ছেন। আমরা মামলা করার পর ঠিকাদার নিজেকে বাচাতে উল্টো মামলা করেন। তবে পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ দেখার পর আব্দুল আওয়ালকে গ্রেফতার করেন। বাকি আসামীরা হুমকি দিচ্ছে। সে কারনে বাসায় থাকতে ভয় লাগছে আতঙ্কে আছি। আমি এর সুষ্ট বিচার চাই।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ারে আলম খান জানান, ঠিকাদার আব্দুল আওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং