ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি।। বিভিন্ন ফাইলে চোখ রাখা, স্বাক্ষরের পর স্বাক্ষর, সভা-সেমিনার, জনদুর্ভোগের অভিযোগ দিনভর এসব সামলান তিনি। কিন্তু দিনের শেষে তার ঠিকানা একটুকরো সবুজ জমিন। সেখানে তিনি আর কেউ নন একজন ‘কৃষক’।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানার বাংলোর পেছনের সেই ক্ষুদ্র কৃষিভূমিতে চাষ হয় ঢেঁড়স, লাউ, কুমড়া, করলা, শসা, পুঁইশাক, লালশাকসহ নানা ধরনের মৌসুমি সবজি। ফাঁকা সময় মিললেই জমিতে নেমে পড়েন তিনি। সকাল হোক বা বিকেল, তার হাতেই সযতেœ বেড়ে ওঠে বিষমুক্ত ফসল।
‘এটা শুধু শখ নয়,’ বললেন ডিসি ইশরাত ফারজানা। ‘নিজের পরিবারের জন্য নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করতে চাই বলেই নিজ হাতে এই চাষাবাদ। রাসায়নিক নয়, প্রকৃতির পথেই হাঁটছি। চাই অন্যরাও উৎসাহ পাক।’
তার এই বাগানে কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের প্রবেশ নেই। জৈব সার, কম্পোস্ট আর ঘরে তৈরি প্রাকৃতিক কীটনাশকেই তার ভরসা—যেমন নিমপাতা, রসুন আর হলুদের মিশ্রণে তৈরি তরল।
বাংলোর প্রাঙ্গণে শুধু সবজি নয়, রয়েছে বাতাবি লেবু, আম, জাম, কাঁঠালসহ নানা ফলের গাছ। এক ধরণের আত্মিক শান্তি খুঁজে পান এই সবুজ সান্নিধ্যে।
ঠাকুরগাঁওয়ের প্রবীন সাংবাদিক আলহাজ্ব মো: আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এ দৃশ্য অনুপ্রেরণার। প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কেউ যদি বিষমুক্ত কৃষিকে গুরুত্ব দেন, তাতে সাধারণ কৃষকরাও উৎসাহিত হন।’
একই সুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসিরুল আলমের কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘ডিসি সাহেবার এই উদ্যোগ একটি উদাহরণ। এটা মানুষকে প্রাকৃতিক কৃষি ও নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থার প্রতি সচেতন করবে।’