জামান হাড়িখালী অবস্থান কালীন সময়ে একটি মেয়েকে পছন্দ করে। কাজ শেষ করে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় বেড়াতে যায়। সেখানকার লোকেদের আতিথিয়েতায় মুগ্ধ ও অবাক হয়ে যায় দাওয়াত নিমন্ত্রণ গ্রহন করতে করতে। সপ্তাহ খানেক অবস্থান কালীন সময়ে আঠার/উনিশ বাড়ীতে তাকে দাওয়াত খেতে হয়েছে। সেনেরগাঁতী থেকে ফেরার পুর্বে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম ভিটে পরিদর্শন করে ফিরে আসে পাবনায়।
সামটা গ্রামে রেখে আসে তার একতরফা ভালো লাগা প্রেয়সীকে।
হয়তো অচিরেই ফিরে যাবে আবারও সামটা হাঁড়িখালী গ্রামে।তার পছন্দের মানস প্রিয়াকে প্রস্তাব দিতে।
বাড়ী ফিরে জামান রাজনৈতিক মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ে। তার আর ফেরা হয়না মানস প্রিয়ার সম্মুখ সাক্ষাতে!
কেটে যায় কয়েক বছর ঝামেলা থেকে উদ্ধার হতে। জামানের বড় ইচ্ছে থাকার পরেও সে অপারগায় ভুগেছে কয়েক বছর। ইতিমধ্যে জামানের ছোট বোন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়াতে এডমিশন টেষ্ট দিতে যাবে, সঙ্গে যাওয়ার দায়িত্ব পড়ে জামানের উপর। ইবিতে অনার্স ভর্তি পরীক্ষা শেষে জামান তার ছোট বোনকে বুঝিয়ে সাথে নিয়ে যায় যশোরের সামটা-হাঁড়িখালী গ্রামে। অতিথি রুপে উপস্থিত হয় আন্টির বাড়ীতে। আন্টির স্বামী মোঃ সোলায়মান হোসেন সহ পরিবারের সকলেই তথা জামানের বন্ধু-বান্ধবরা সকলেই অনেক খুশি হয়। খুশি হয় তার পরমাত্মীয় আব্দুল গফুরও তার পরিবার।
আনমনে জামান খোঁজ নেয় তার মানস প্রিয়া,অপ্রকাশিত মহাকাব্যের মহানায়িকাকে! খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে মানস প্রিয়া এখন কোন এক সুপুরুষের ভালোবাসার ফ্রেমে বন্দী হয়ে গেছে।
মনটা দুচরে-মুচরে যায় মুহূর্তেই। শুরু করে তার অঘোষিত মানস প্রিয়াকে নিয়ে কাব্যকথা লেখা!
চঞ্চল মনটাকে শুকনো পাতার মত করে ছুটে যায় সেনেরগাঁতি ফুলবাড়ীয়া। সেখানে তার আত্মীয় মোঃ আনসার আলীর বাড়ী হয়ে পাবনা ফিরে আসে।
চলতে থাকে সময়ের কাটা, কেটে যায় দিন,মাস, বছর, যুগকাল। পৃথিবীর মানচিত্রে তাকিয়ে জামান ভাবে সবই আছে এই পৃথিবীতে শুধু নেই তার প্রেয়সী মানস প্রিয়া।
বিষন্ন ভগ্নহৃদয় নিয়ে বসে যায় টেবিলে!
কাগজ-কলমের মিতালীতে চলতে থাকে আঁকাআকি! প্রেম ব্যথা-বেদনা, প্রাপ্তী-প্রত্যাশা, স্বপ্ন স্বপ্নের ছোঁয়া নিয়ে অব্যাহত থাকে প্রেম চর্চা।
কত জনকে খুঁজে আবিস্কার করে, কতজনের ভীড়ে খুঁজে ফেরে মানস মূর্তি তার মানস প্রিয়াকে! বহুজনেরই সংস্পর্শে আসে নির্বাক প্রেমিক জামান কিন্তু কারো চোখেই দেকতে পায়না মানস প্রিয়ার মুখোচ্ছবি, প্রতিচ্ছবি!
অবিরাম অন্তহীন পথের প্রত্যাশায় চলছে মানস প্রিয়ার প্রতি উৎসর্গীত জামানের অংকন-ফোড়ন যজ্ঞ।
হয়তো জামান কল্পনার টেবিলে রেখে সামনে বসে দুঃখ বিষাদে মানস চোখে দেখছে তার মানস প্রিয়াকে।
হয়তো তার মানস প্রিয়া অপ্রকাশিত কোন প্রেমিকের বুকের রক্ত শুকিয়ে তার প্রতীক্ষায় লিখে চলছে অবিরাম।
প্রত্যাশার চাদর মুড়িয়ে হয়তো পথ চলতে চলতে হয়তো কোন দিনও পাবেনা খুঁজে তার মানস প্রিয়াকে?
তবুও তার মানস প্রিয়া হয়তো আসবে তার পাশে, বসবে-হাসবে, বুকে জড়িয়ে ধরে বলবে আমি তোমার মানস প্রিয়া। ওগো! আমি এসেছি দেখো তোমার হৃদয় আঙ্গিনায়, আমি জানতাম না যে, আমিই তোমার মানস প্রিয়া। তুমি কোন দিনও আমাকে বলোনি তো ওগো অনন্যা, ওগো প্রেয়সী প্রিয়ংবদা তুমি আমার মানস হৃদয়ে, মানস চোখে মানস প্রিয়া!
চলছে অবিরাম জামানের নিবিড় চর্চায় মানস প্রিয়াকে বাঁচিয়ে রাখার নিবিড় নিরলস সাধনা ও বিমূর্ত প্রেমের চাষাবাদ লেখালেখির মাধ্যমে। সংসার গড়তে গিয়ে মানস প্রিয়ার মুখোচ্ছবি, প্রতিচ্ছবিতে আবদ্ধ হতে পারেনি অব্যাহত প্রচেষ্টায়……!
✒️এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
কবি-কলামিস্ট,সাংবাদিক-গীতিকার,পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী,
চাটমোহর,পাবনা।
ইমেইলঃ kdaakash2024pabna@gmail.com