নিজস্ব প্রতিবেদক।। রবিবার পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রার একটি দলিল নিবন্ধন করার উদ্দ্যোগ নেওয়ায় পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ৮ জন আহত হয়েছে। সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করায় পীরগঞ্জ থানা কর্তৃপক্ষ সেখানে জরুরী পুলিশ মোতায়েন করেন।
জানা যায়, জগথা মৌজার সিনেমাহল এলাকায় আতাউর রহমান, আখতারুল ইসলামের কাছে বিক্রয় করার জন্যে দলিল লিখিত করেন। আইনি জটিলতা থাকার কারণে গত ৩ মাস ধরে পূর্বের সাব-রেজিষ্ট্রার মোঃ শফি আকরামুজ্জামান দলিলটি নিবন্ধন করেনি।
উক্ত জমি আতাউর রহমান এর বোন শাহানা বেগম ও জোসনা হেনা তাদের দুই পুত্র জিল্লুর রহমান শুভ ও সমুদ্র রহমান কে ওয়ারিশ ১৩ শতক জমি পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে দলিল সম্পাদন করিয়া দেন।
উক্ত জমিতে তারা শান্তি পূর্ন ভোগদখলে আছেন। পরবর্তিতে উক্ত জমির মালিকানার বিরোধ দেখা দেওয়ায় আতাউরের ভাগিনাদ্বয় ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলা করেন। উক্ত মামলা দেওয়ানী আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আইনবির এ্যাডভোকেট নওশাদ আলী জানান ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫২ ধারায় উক্ত জমি হস্তান্তর বিক্রয় ও শ্রেণি পরিবর্তন না করার বিষয়ে আইনে সু-স্পষ্ট বিধান রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা রেজিষ্ট্রার মোঃ হেলাল উদ্দিন ও পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রার আবরার ইবনে রহমান সরকারি নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করেই মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে রবিবার উক্ত সম্পত্তি আতাউর রহমান এর পক্ষে নিবন্ধন করে দেওয়ার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেন।
খবর পেয়ে জিল্লুর রহমান শুভ ও সমুদ্র রহমান ও তার লোকজন উক্ত জমি নিবন্ধন না করার জন্যে সাব-রেজিষ্ট্রাকে অনুরোধ জানান। প্রায় ১ মাস পূর্বে তারা পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রারকে এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ গুরুত্ব না দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জেলা রেজিষ্ট্রার ও সাব-রেজিষ্ট্রার মিলে রবিবার উক্ত জমি নিবন্ধন করে দেওয়ার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করায় দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস এলাকায় জনমনে চরম আতংক ছড়িয়ে পরে। ফলে রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম ২ ঘন্টা বন্ধ থাকে। জেলা রেজিষ্ট্রার ও সাব-রেজিষ্ট্রার একটি পক্ষকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ায় উদ্দ্যোগ নেওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এছাড়া গত সোমাবার একই ঘটনায় পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ায় পুলিশ মোতায়েন করেছিল থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ সেখ।
এ ব্যাপারে জেলা রেজিষ্ট্রার হেলাল উদ্দীন জানান আমাকে এসব ঘটনার কথা পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্টার অবগত করেনি। বিষয়টি আমি দেখছি।
অপর দিকে পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্টার আবরার ইবনে রহমান জানান দলিলটি অনেকদিন ধরে পেনডিং আছে। দলিল রেজিষ্ট্রেশন না করার ব্যাপারে আইনি মন্তব্য লিখে নোট দেওয়ার প্রয়োজনীয় খাতা-পত্র আমার অফিসে নেই। ফলে জটিলতা বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, দলিল উপস্থাপন করা হলে, পারিপাশির্^ক বিষয়টি বিবেচনা করে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিবো।