ফজলার রহমান গাইবান্ধা থেকে ঃ- পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউপি সদস্য রাহিদুল ইসলাম বাবুকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে বেঁধে বর্বরোচিত নির্যাতন ও জেল হাজতে প্রেরনের ঘটনায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিজ্ঞ আমলী আদালত পলাশবাড়ী গাইবান্ধায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ইউপি সদস্য রাহিদুল ইসলাম বাবু তার মামলা নং- সিআর/৩৩৩/২০২৩। অপরদিকে বরকতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী শিরিনা বেগম বাদী হয়ে যে মামলা করেন তার মামলা নং-সিআর/ ৩২৮/২৩।
মামলার বাদী শিরিনা বেগম বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট এর নিকট দেয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন তিনি বরকতপুর হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেনীর একজন কর্মচারী। সেখানে তিনি প্রায় ১ বছরের অধিক সময় ধরে চাকুরী করেন।
গত ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ২০২৩ এ মুলত যে ঘটনা ঘটে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণী হচ্ছে টাকা পয়সা নিয়ে তার স্বামীর সাথে প্রতিনিয়তই দ্বন্দ্ব বা ঝামেলা হচ্ছিল। যেহুতু সে এমপিও ভুক্ত স্কুল থেকে প্রতি মাসে ১০হাজার টাকা বেতন পায়। তাই সেখান থেকে প্রতিমাসে স্বামীকে ৫ হাজার টাকা দেয় । তার দুটি সন্তান আছে। মেয়ের বয়স ১১বছর ছেলের বয়স আড়াই বছর। স্বামীর সাথে টাকা পয়সা নিয়ে প্রায়ই ঝামেলার কারনে পুঁজার ছুটিতে শিরিনা তার বাবার বাড়ীতে যাইতে চেয়েছিলো । সেদিন তার বোন ও ভাগ্নি স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য মেটানোর জন্য শিরিনার স্বামীর বাড়ীতে বেড়াতে আসে কিন্তুু তা অমিমাংসিত থেকেই যায় । শ্বশুর বাড়ীর লোকজন তাকে তার বাবার বাড়ী যেতে দেয়নি। যে কারনেই রাতে সে স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করে। শিরিনা বাবার বাড়ীতে যাওয়ার জন্য ব্যাগপত্র গুছিয়ে রেখে সকালের দিকে তার কর্মস্থল অর্থ্যাৎ হাইস্কুলের কলিগের স্বামী ইউপি সদস্য রাহিদুল ইসলাম বাবুকে ফোন দেয়। যেহুতু সে একজন মেম্বার এবং সাংবাদিক। তার সাথে পারিবারিক ভাবে আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক ছিলো এমনকি আত্মীয়তার সম্পর্কও বিদ্যমান। আমাদের ২ পরিবারের মাঝে দীর্ঘদিন থেকে যাতায়াতও রয়েছে । আমি বিভিন্ন সময়ে পরিবারের সমস্যা নিয়ে তার কাছে পরামর্শ নেই একজন অভিভাবকের মতোই ৷ আমি মোবাইলে মেম্বারকে সব ঘটনা বলে তাকে আমার বাড়ীতে আসতে বলি। ঘটনা শুনে সহযোগীতার জন্য বাবু মেম্বার সকাল ৬টার দিকে আমার বাড়ীতে আসে ৷ এতে আমার বাড়ীর লোকজন বাবু মেম্বারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং আমার সাথে বাবু মেম্বারের অনৈতিক সম্পর্ক আছে বলে হৈচৈ ফেলে দিয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। প্রকৃতপক্ষে তার সাথে আমার কোন অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো না বা নাই। তাকে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত নির্যাতন এবং মামলার ঘটনা পুরোটাই মিথ্যা বানোয়াট এবং সাজানো। আমার বাড়ীতে তখন কোন চুরি বা অপহরনের ঘটনা কখনোই ঘটেনি। যদিও ৩য় পক্ষ বাদী হয়ে সাজানো মামলা করে আমাকে অপহরন ও চুরির ঘটনা দেখানো হয়েছে । সেদিনের ঘটনায় তার কোন দোষ ছিলো না সে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ মিমাংসা করার জন্যই মুলত এসেছিলো ।
অপরদিকে রাহিদুল ইসলাম বাবু তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, সে একজন জনপ্রিয় ইউপি সদস্য ও পেশাদার একজন সাংবাদিক। সে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবের একজন সদস্য।
তাকে সামজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত নির্যাতন করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য ঘটনা শিরিনা বেগমের সাথে তার কোন শারীরিক সম্পর্ক নেই বা ছিৱো না ৷ শুধুমাত্র মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ৩য় পক্ষের একজন ব্যাক্তি তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করেছে। তার মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। মুলত ঘটনা হচ্ছে বাবু মেম্বারের ভাতিজির সাথে ঐ গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে মিনয়ের দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিলো অবশেষে বিয়ে সম্পন্ন হয় ৷ বাবু মেম্বার ঐ প্রেম ও বিয়ের বিষয়টি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলো ৷ মুলত তখন থেকেই মন্টু মিয়া মেম্বার বাবুকে ফাঁসানোর গোপন পরিকল্পনা করে আসছিলো ৷ আর সেই গোপন ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন মেম্বার বাবু ৷
শিরিনা বেগম কর্তৃক দায়েরকৃত, মামলার আসামীরা হলেন অত্র এলাকার বিশিষ্ট দাদন ব্যবসায়ী মজিদ নালো, মন্টু মিয়া, হাবিজার রহমান, খলিল মিয়া, মিন্টু মিয়া, মজিবর রহমান নালু, মিনয়, মাদক মামলার আসামী মজনু মিয়া গংসহ এজাহার নামীয় ১৫ জন ৷ সকলের সাং আমলাগাছী থানা পলাশবাড়ী জেলা:- গাইবান্ধা।
অপরদিকে ইউপি সদস্য ও সাংবাদিক রাহিদুল ইসলাম বাবু কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হলেন, জাকির হোসেন মাস্টার, আব্দুল মজিদ নালো, মজিবর রহমান লালু, মিন্টু মিয়া, মজনু মিয়া, মধু মিয়া, খলিল মিয়া, মুশফিক মিয়া, মতিয়ার রহমান, আবির, জিসান, মিনয় গং সহ ২০ জন।