1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :

জরিমানার টাকা মাতব্বরদের পকেটে শিশুর ইজ্জতের মূল্য একলাখ

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার।।নওগাঁর মহাদেবপুরে চকলেট খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে ৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে করা থানায় মামলা করার ১ সপ্তাহ না হতেই জোরপূর্বক আপোস করানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।

বাদীর অনুপস্থিতিতে হাতুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিমান চন্দ্র বর্মন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, উপজেলা সদরের বাগানবাড়ির ফরহাদ হোসেনসহ স্থানীয় কতিপয় নেতা গত সোমবার সন্ধ্যায় বাদীর লোকজনের সাথে গোপন বৈঠকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানার মাধ্যমে বিষয়টি আপোস করে দেন। জরিমানার এ অর্থের মধ্য থেকে বাদীর জন্য এক লাখ টাকা মাতব্বর ফরহাদের নিকট রেখে অবশিষ্ট টাকা তারা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন।
শিশুটির মা অভিযোগ করে বলেন, তার ৬ বছরের শিশুর প্রতি যে পাশবিক অত্যাচার করা হয়েছে তার সুষ্ঠ বিচার তিনি চান। আসামীকে বাঁচাতে স্থানীয় মাতব্বরা জোরপূর্বক বিষয়টি আপোসের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন এমন অভিযোগও করেন তিনি।
শিশুটির পিতা এ মামলার বাদী অশেন বর্মন বলেন, তার জোতদার ফরহাদের মাধ্যমে পরে তিনি জানতে পেরেছেন, বিষয়টি আপোসের জন্য তার কাছ থেকে ব্যাংক চেক জমা নিয়ে এক লাখ টাকা জমা দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিমান চন্দ্র বর্মন। তার অনুপস্থিতিতেই স্থানীয় মাতব্বরা বিষয়টি আপোসের চেষ্টা করেছেন এবং আপোসের জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করছেন বলেও জানান তিনি।
আসামীর উপযুক্ত শাস্তি দাবী করে তিনি বলেন, ঘটনার দিন শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসতেও আসামী ও তার লোকজনের বাধার সম্মুখিন হন।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আপোসের জন্য তারা আসামীর এক লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর মধ্যে থেকে এক লাখ টাকা বাদীর জন্য ফরহাদের কাছে রাখা আছে।
ফরহাদ হোসেন তার কাছে এক লাখ টাকা জমা আছে স্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টি আপোসের জন্য হিমান বর্মণ টাকাগুলো নিজের কাছে কাছে জমা রেখে ব্যাংক চেক দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু উপস্থিত লোকজনের অনুরোধে তিনি ব্যাংক চেক জমা দিয়ে টাকাগুলো তার কাছে রেখেছেন।
হাতুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিমান চন্দ্র বর্মন সালিশে জরিমানার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যেহেতু এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে, আইনগতভাবেই এর সুরাহা হবে।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, শিশু ধর্ষণের চেষ্টার মত জঘন্যতম অপরাধের মামলায় স্থানীয়ভাবে আপোসের কোন সুযোগ নেই। আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য যে, গত ৩১ অক্টোবর বিকেলে ওই শিশুটিসহ আরো দুজন শিশু বাড়ির পাশে গোপালপুর গ্রামের নিপেন চন্দ্র বর্মণ ওরফে ভুট্টুর দোকানে চকলেট কিনতে যায়। এ সময় অন্য দুটি শিশুকে চকলেট দিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে ভুক্তভোগী শিশুটিকে তার ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে শিশুটিকে বাড়ির ভিতর রেখেই ভুট্টু সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই রাতেই তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে গত ২ নভেম্বর হাতুড় ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের রাজেন্দ্র চন্দ্র বর্মণের ছেলে নিপেন চন্দ্র বর্মণ ওরফে ভুট্টুকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং