স্টাফ রিপোর্টার।। পঞ্চগড়-১ (তেঁতুলিয়া, সদর-আটোয়ারী) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. মজাহারুল হক উন্নয়ন শোভাযাত্রার নামে যানবাহনের মাধ্যমে শোডাউন করেছেন। বাস, মিনিবাস, মিনি ট্রাক ও মোটর সাইকেলে করে জেলা, তিন উপজেলা ও এক পৌরসভার, ইউনিয়ন,ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের একটি অংশের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমর্থক স্লোগান ও বাদ্যযন্ত্র, হাতে প্ল্যাকার্ড ও নৌকা প্রতীকসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে চিনিকল মাঠে এসে জড়ো হয়।
সোমবার ( ১৩ নভেম্বর) পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর এই শোডাউনের যাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি পঞ্চগড় আটোয়ারী সড়ক ধরে আটোয়ারী হয়ে বোদা-তেঁতুলিয়া সড়ক ধরে তেঁতুলিয়ায় গিয়ে শেষ হয়। এর আগে সদর উপজেলা পাঁচটি ভ্যানুতে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল দুপুরের আহারের ব্যবস্থা। সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার জন্য ডাকা হলেও শেষ পর্যন্ত এটি এমপি মজাহারুল হক প্রধানের নির্বাচনী মহড়ায় পরিণত হয়। একটি হুডখোলা মাইক্রোতে করে দাঁড়িয়ে থেকে পথের দুধারের মানুষকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান মজাহারুল হক প্রধান।
এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংসদ সদস্য আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নেত্রী আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত তাকেই মনোনয়ন দেবেন। তিনি শান্তিপূর্ণভাবে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আহবান জানিয়ে বলেন, গত সংসদ নির্বাচনের আগে শোডাউনের অভিজ্ঞতা থেকে এবার পাঁচটি স্থানে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ পঞ্চগড়ের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের জন্য আনন্দের দিন। কারণ এত তৃনমূলের নেতাকর্মী একত্রিত হওয়ায় পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগের একটি স্মরনীয় দিন। আগামি নির্বাচনে নৗকা মার্কার মনোনয়ন দিয়ে আবারও নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করে এই আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়ার আশ^াস দেন তিনি।
সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম সারোয়ার হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোশারফ হোসেন. পৌর সভার মেয়র ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া খাতুন বক্তব্য দেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান শেখ মিলন। সমাবেশে বক্তারা আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন বলে দাবি করেন। আগামি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারও মজাহারুল হক প্রধান নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দিলে একসাথে কাজ করে শেখ হাসিনাকে এই আসনটি উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট এই শোডাউনে যোগ না দিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। শোভাডাত্রায় যোগ না দেওয়ার কারণে হিসেবে তিনি বলেন, তিনি নিজেই পঞ্চগড়-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী। কাজে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশীর শোভাযাত্রা যোগ দেইনি।
এদিকে, উপরোক্ত দুজন ছাড়াও আরো ছয় নেতা তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগসহ বিভিন্ন ভাবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা, আবু তোয়বুর হমান, রেলমন্ত্রীর বেহাই জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন, আটোয়ারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ও তেঁতুলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী মন্ডল। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা অন্য সাত প্রার্থীর মধ্যে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে আছেন। তিনি গত ১৫ বছর ধরে নানান কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় উঠেছেন। আটোয়ারী, তেঁতুলিয়া ও পঞ্চগড় সদরে অনুষ্ঠিত পৃথক তিনটি বিশাল সমাবেশে মুক্তাকে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নের দাবি তুলে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এত বড় সমাবেশ এর আগে কোন নেতাই করতে পারেন নি বলে এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। গত ১৫ বছরে এ আসনটির বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে, শিক্ষা-চিকিৎসায়, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে, মসজিদ মন্দিরসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত দান অনুদান ও বিভিন্ন দুঃসময়ে মানুষের পাশে থেকে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন বলে দাবি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীসহ অনেকেই। অনেকেই এটাকে মুক্তার পাল্টা সমাবেশ হিসেবেই দেখছেন। #