ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের পূর্ব আরাজি চন্ডিপুর গ্রামের নুর নাহার (৩২) নামে চন্ডিপুর হাই স্কুলের আয়াকে পিটিয়ে বাম, পা ভেঙ্গে দিয়েছে নাজিম উদ্দীন (২৮)নামের এক যুবক ও তার দলবল।
নুর নাহার জানান, দীর্ঘ দিন হইতে আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত বাড়ির রাস্তার পাশে একই এলাকার প্রতিবেশী নাজিমউদ্দীন। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ৮ ডিসেম্বর শুক্র বার বেলা ১টা ৫০ মিনিটের দিকে আমার কর্ম স্থল “পূর্ব আরাজি চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়” থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দলেবলে হামলা চালায় নাজিম উদ্দীন। হামলায় আমার বাম পা ভেঙ্গে দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমার পরনের কাপড়চোপড় ধরিয়া টানা হেচড়া করিয়া ছিড়িয়া প্রায় বিবস্ত্র বা শ্লীলতাহানি ঘটায়।
নুরনাহারের স্বামী আবুল কালাম আজাদ জানান, তার স্ত্রী পূর্ব আরজি চন্ডিপুর বিদ্যালয়ে আয়া পোস্টে চাকরি করে। একই এলাকার আবুল কালামের ছেলে নাজিম উদ্দীন (২৮) এক দেড় মাস ধরে খারাপ কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ বিষয়ে গড়েয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পূর্ব আরাজি চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রইছ উদ্দিন সাজু কে আমি ও আমার স্ত্রী মৌখিক ভাবে অভিযোগ করি। বিষয় টি গত ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার কথা থাকলেও স্কুলে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের পরিক্ষা থাকার কারণে শনিবার বসার তারিখ নির্ধারণ করে চেয়ারম্যান সাহেব কিন্তু এই কথা শুনে নাজিম উদ্দীন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
আমার স্ত্রী স্কুল থেকে বাড়িতে আসার পথে নাজিমউদ্দীন ও তার দলবল এসে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে এবং পড়েনের কাপড় চোপড় ধরিয়া টানা হেচড়া করিয়া ছিড়িয়া প্রায় বিবস্ত্র বা শ্লীলতাহানি করে। নাজিমের হতে থাকা লোহার রডের বারিতে আমার স্ত্রীর বাম পা ভেঙে যায়। আমার স্ত্রী মাটিতে পড়িয়া গেলে নাজিমের লোকজন আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গলা চাপিয়া ধরে এলাকার স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি দেখতে পেয়ে তাদের হাত থেকে আমার স্ত্রীকে রক্ষা করে এবং স্থানীয় এলাকাবাসী আমার স্ত্রীকে একটি অটোরিকশায় নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়।
সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক জানান, নুর নাহাররে ডান বাহু ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার বাম পা ভেঙ্গে গেছে।
এই বিষয়ে গড়েয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পূর্ব আরাজি চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রইছ উদ্দিন সাজু বলেন, নুর নাহার আমার স্কুলের আয়া পোস্টে চাকরি করে, নাজিমউদ্দীনের কু-প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনাটি সে আমাকে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করে।
গত ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার আমার স্কুলে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের পরিক্ষা ছিলো, পরিক্ষা শেষ করে, স্কুলের কাজ শেষ করে রাড়িতে যাওয়ার সময়, নাজিম উদ্দীন পিছন থেকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে এতে তার বাম পা ভেঙে যায়। তার স্কুল থেকে নেওয়া ভ্যানেটি ব্যাগে রাখা চার মাসের বেতন ও পরিক্ষার ডিউটির ভাতা সহ দশ হাজার ছয় শত টাকা সহ ভ্যানেটি ব্যাগটি অসৎউদ্দেশ্যে চুরি করিয়া নেয়। এধরনের কাজ করা তারা মোটে ও ঠিক করেনি।
নাজিমের বাসায় ঘটনার বিষয় জানতে গেলে তাকে তার বাসায় পাওয়া যায়নি এবং মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। নজিমের পরিবারের লোকজন সাংবাদিকদের বলেন এটি একটি বনোয়াট সাজানো ঘটনা। তবে নাজিমউদ্দীন এর বড় ভাই ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন আমার ছোট ভাই একজন মহিলার গায়ে হাত দেওয়াটা ঠিক করেনি। অপরাধী যেই হোক না কেন আমি তার বিচার চাই।
এ বিষয়ে নূর নাহর বেগম বাদি হয়ে গত ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে ৬ জনকে আসামী করেএকটি মামলাদ্বায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ওয়ারেন্টের আদেশ দেন।