স্টাফ রিপোর্টার।। উত্তরের হিমাঞ্চল জেলা পঞ্চগড়ে তিনদিন পর কমেছে তাপমাত্রা। তাপমাত্রা কমলেও ভোরের রোদের ঝলকানিতে নেই আগের মতো সেই শীতের তীব্রতা। এতে করে জনপদে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্যের স্বস্তি। সকাল থেকেই নিম্নআয়ের মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ফিরছেন কাজে।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর তিন ঘন্টা আগে ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে আবহাওয়ার তথ্যটি জানিয়েছেন জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গতকাল ২৮ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনদিন ১২ থেকে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রির মধ্যে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, গত তিনদিন পর তাপমাত্রা কমলেও প্রতিদিনের মতো ভোরে হালকা কুয়াশা দেখা গেলেও কুয়াশা ভেদ করে জেগে উঠেছে পূবালী সূর্য। সে আলোয় ছড়াচ্ছে সকালের মিষ্টি রোদ। এতে চা শ্রমিক, পাথর শ্রমিক, ভ্যান চালকসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষদের মাঝে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্যের স্বস্তি। সকালেই কাজে যেতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এ অঞ্চলে এখন সন্ধ্যা ও রাতেই বেশি ঠান্ডা লাগছে। ভোরে সূর্য উঠে যাওয়ায় রোদে কমতে থাকে শীতের মাত্রা। সকালের মিষ্টি রোদে আগের যে কনকনে শীতের অনুভূতিটা ছিল তা কমেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকছে। এরপরে হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে। সে হিমেল হাওয়ায় সন্ধ্যা থেকে ঠান্ডা লাগে।
ভ্যান শ্রমিক, পাথর শ্রমিক ও দিনমজুরা জানান, এখন আর আগের মতো ঠান্ডা নেই। সকালে সূর্য উঠে যাওয়ায় তাপমাত্রা বাড়ায় ঠান্ডা কম ভাই। তাই সকালে কাজে বেড়িয়েছি।
এদিকে শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, গত তিন দিন ১২ ঘরে তাপমাত্রা রেকর্ডের পর শুক্রবার সকাল ৯টায় ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। এ জেলা হিমালয় বিধৌত এলাকায় অবস্থান হওয়ায় এখানে অন্যান্য এলাকা থেকে শীত আগে নামে। এ সময়টাতে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, ‘পঞ্চগড় শীবপ্রবণ জেলা। এখানে প্রায়দিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে। শীত মোকাবেলায় জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি আছে। ইতিমধ্যে ২০ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র উপহার হিসেবে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই আরো শীতবস্ত্র পাওয়া যাবে। এছাড়া বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগেও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। ’ #